আমাদের শরীরের শক্তি ধরে রাখা অনেক সময় কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে, বিশেষ করে যদি আমরা সঠিক খাবার নির্বাচন না করি। শরীরের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে আমরা যে খাবার খাই, তা থেকেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তি পাওয়া যায়। তবে ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীর অনেক সময় পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না, ফলে আমরা দুর্বলতা অনুভব করি। সৌভাগ্যবশত, এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো নিয়মিত খেলে প্রাকৃতিকভাবে শক্তি বাড়ানো সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই খাবারগুলো সম্পর্কে—
১. চিয়া বীজ
ছোট কিন্তু অত্যন্ত শক্তিশালী, চিয়া বীজ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার এবং প্রোটিনে সমৃদ্ধ। এই পুষ্টি উপাদানগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘস্থায়ী শক্তি প্রদান করে। চিয়া বীজ তরল শোষণ করে জেলের মতো একটি ঘনত্ব তৈরি করে, যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে হাইড্রেটেড ও পরিপূর্ণ রাখে। সহজেই শক্তি বৃদ্ধির জন্য এটি স্মুদি, দই বা রাতের ওটসে যোগ করুন।
২. কুইনোয়া
কুইনোয়াকে ‘সুপার গ্রেইন’ বলা হয়, যদিও এটি মূলত একটি বীজ। এটি প্রোটিনের সম্পূর্ণ উৎস, অর্থাৎ এতে নয়টি অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান। কুইনোয়াতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করে। কুইনোয়ার জটিল কার্বোহাইড্রেট ধীরে ধীরে এবং স্থিতিশীলভাবে শক্তি নির্গত করে, যা দীর্ঘ সময় ধরে শরীরকে কর্মক্ষম রাখে।
৩. মিষ্টি আলু
জটিল কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু শক্তির একটি চমৎকার উৎস। এটি ধীরে ধীরে হজম হয়, ফলে দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে শক্তি বজায় রাখে। মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন এ এবং পটাসিয়াম, যা পেশি ও সামগ্রিক প্রাণশক্তি বাড়াতে সহায়ক। এটি ভাজা, চটকে বা পুড়িয়ে বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়।
৪. কলা
প্রাকৃতিক শক্তির উৎস হিসেবে কলার জুড়ি মেলা ভার। এটি প্রাকৃতিক শর্করা, ফাইবার এবং পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ, যা তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। দুপুরের খাবারের পর অলস লাগলে দ্রুত শক্তি পাওয়ার জন্য একটি কলা খেতে পারেন।
৫. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো স্বাস্থ্যকর মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘস্থায়ী শক্তি প্রদান করে। এতে রয়েছে বি ভিটামিন, যা খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শক্তিবর্ধক খাবার হিসেবে হোল গ্রেইন টোস্টের ওপরে অ্যাভোকাডো ছড়িয়ে দেওয়া বা সালাদে যোগ করা উপকারী।
৬. ডার্ক চকোলেট
উচ্চমানের ডার্ক চকোলেট (৭০% কোকো বা তার বেশি) থিওব্রোমিন নামক একটি প্রাকৃতিক উদ্দীপক উপাদানে সমৃদ্ধ, যা শক্তির মাত্রা বাড়াতে সহায়ক। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং সামান্য পরিমাণে ক্যাফেইনও রয়েছে, যা মনোযোগ বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে। দুপুরের খাবারের পর বা হালকা ক্ষুধা লাগলে ডার্ক চকোলেট খেলে দ্রুত এনার্জি পেতে পারেন।
নিয়মিত এই খাবারগুলো খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি বজায় রাখা সম্ভব। তাই শক্তি ধরে রাখতে সঠিক খাবার নির্বাচন করুন এবং সুস্থ থাকুন!