মশার ধূপ আপনার দেহেরও বিরাট ক্ষতি করছে : সমীক্ষা

মনে আছে মরটিন কয়েলের কথা? কিংবা গুডনাইট বা এলিফ্যান্ট ব্র্যান্ড কয়েল? এত বিখ্যাত কোম্পানির কয়েল অনেকদিন ধরে এদের দেখছেন না, তাই তো? এর কারণ কী ভেবেছেন? এর কারণ হচ্ছে এরা কয়েল উৎপাদনের নীতিমালা মেনে তা উৎপাদন করতো।

মশার কয়েলে যে কার্যকর উপাদান থাকে এর মধ্যে আছে পাইরিথ্রাম, পাইরিথ্রিন, অ্যালেথ্রিন, এসবায়োথ্রিন ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব নির্দিষ্ট অনুপাত ও পরিমাণে ব্যবহার করে কয়েল উৎপাদনের নীতিমালা রয়েছে। এসব কয়েলের কাজ হচ্ছে মশা নক-আউট তথা বেহুশ করে ফেলা বা বিতাড়িত করা, মারা নয়! অর্থাৎ নির্দিষ্ট অনুপাতে উপাদান থাকলে কয়েলের ধোঁয়া স্বাভাবিকভাবে মানুষের জন্য বিষাক্ত ধরা হয়না।

তবে দিনে দিনে মশার বেপরোয়া বিস্তার আর অসামান্য বীরত্বের কারণে সেসব কয়েলে মানুষ হাতে হাতে ফল পচ্ছিলো না। দেখা গিয়েছে কয়েল জ্বালিয়ে রাখলে ওই কয়েলের পাশেই বা উপরে বসে আছে মশা! মানুষ যখন দেখলো এই কয়েলে মশা “মরে” না তখন তাঁরা খুঁজতে লাগলো কার্যকরী কয়েল, অর্থাৎ যেই কয়েল মশা তাড়াবে না বরং মেরেই ফেলবে। সুতরাং ভোক্তার চাহিদার কথা ভেবে গড়ে উঠলো কিলার, ফাইটার, বস, এটাক, সুপার হিট, আম পাতা, জাম পাতা, কাঁঠাল পাতা ইত্যাদি ইত্যাদি নামের অসংখ্য অবৈধ কয়েল তৈরির কারখানা। এরা তখন মনের মাধুরি মিশিয়ে ইচ্ছামতো উপাদান যোগ করে তৈরি করলো কয়েল, আর এর ধোঁয়ায় শুধু মশা না ঘরের অন্যান্য পোকা, তেলাপোকা আর টিকটিকিও মরে সাফ! আর মানুষের তো নাক-চোখের জল কাকার! কিন্তু তাতে কী, মশা তো মরছে!

এখন আপনিই সিদ্ধান্ত নিন, যদি কয়েলে ক্ষতিকর রাসায়নিক/বিষ অবৈধভাবে ৩ থেকে ১৪ গুণ বেশি বাড়িয়ে দেয়া হয় তাহলে এটা আপনার ফুসফুস তথা পুরো শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিনা। অনেক কয়েল তো এক রাতে অন্তত ৫০-১০০টা সিগারেটের সমান ধোঁয়া উৎপাদন করে। তবে মানুষ বাজারে গিয়ে খোঁজে এগুলোই। এসব অবৈধ কারখানার জন্য বাজার হারিয়ে উৎপাদন বন্ধ করেছে বৈধ বড়ো কোম্পানিগুলো। কিছু করার নেই, আমজনতা সবখানে নগদ লাভ খোঁজে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy