রসুন আমাদের দৈনন্দিন রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান। ফোড়ন থেকে শুরু করে চাটনি, গ্রেভি, আচার—সবকিছুতেই এর ব্যবহার অপরিহার্য। সর্দি-কাশির ঘরোয়া টোটকা হিসেবেও রসুন যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে এই সাধারণ ভেষজ ‘অলৌকিক খাবার’-এর খ্যাতি লাভ করেছে। তবে রসুন সম্পর্কে প্রচলিত অনেক ধারণাই আসলে ভুল। আপনিও যদি রসুনের গুণমুগ্ধ হন, তাহলে এই জনপ্রিয় মিথগুলো সম্পর্কে জেনে নিন—
১. কাঁচা রসুন রান্না করা রসুনের চেয়ে ভালো:
অনেকেরই ধারণা কাঁচা রসুনে অ্যালিসিন নামক একটি যৌগ বেশি থাকায় এটি রান্না করা রসুনের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর। অ্যালিসিনের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা অবশ্যই আছে। তবে এর মানে এই নয় যে রান্না করা রসুন একেবারেই অকেজো। রসুন ভাজলে বা সেদ্ধ করলে কিছু অ্যালিসিন হারালেও, রান্নার প্রক্রিয়ায় অন্যান্য উপকারী যৌগ সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাছাড়া, রান্না করা রসুন হজম করাও সহজ এবং এর স্বাদও ভিন্ন হয়।
২. রসুন সব স্বাস্থ্য সমস্যা নিরাময় করতে পারে:
রসুন নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, প্রদাহ-প্রতিরোধী এবং হৃদরোগ-প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে শুধুমাত্র রসুন খেলেই সব স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে—এই ধারণাটি ভুল। কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে রাতারাতি বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যাবে না বা কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ নিরাময় হবে না। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি রসুন উপকারী হতে পারে, তবে এটিকে ওষুধের বিকল্প হিসেবে ভাবা উচিত নয়।
৩. রসুন নষ্ট হয় না:
অনেকের ধারণা রসুন দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে অন্য যেকোনো খাবারের মতোই রসুনও পচে যেতে পারে। অঙ্কুরিত রসুন খাওয়া গেলেও এর স্বাদ তেতো হতে পারে। রসুনকে তাজা রাখতে, এটিকে ঠান্ডা ও শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করুন, যেখানে বাতাস চলাচল করতে পারে। দুর্গন্ধ এড়াতে ফ্রিজে না রাখাই ভালো।
৪. রসুন খেলে মশা দূরে থাকে:
এই ধারণাটি বেশ জনপ্রিয় হলেও এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। ত্বকের মাধ্যমে নির্গত রসুনের তীব্র গন্ধ পোকামাকড় দূরে রাখতে পারে বলে মনে করা হলেও, বিজ্ঞান একে সমর্থন করে না। মশা তাড়ানোর জন্য ইউক্যালিপটাস তেল অনেক বেশি কার্যকর। তাই মশা তাড়াতে রসুনের উপর ভরসা না করাই ভালো!