দিন কয়েক ধরে একাধিক রিপোর্ট সামনে এসেছে, যেখানে দেখা গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধ মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষত, ব্লাড প্রেশারের ওষুধসহ আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বড় বড় কোম্পানির ওষুধ নকল করে কিছু জাল ওষুধ বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
দীর্ঘদিন ধরে কাশি, সর্দি এবং অন্যান্য অসুস্থতার ওষুধ নিয়ে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন যে তারা নকল ওষুধ গ্রহণ করেছেন কিনা। তাই ওষুধ কেনার আগে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তা জানা জরুরি।
ওষুধ কেনার সময় কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
নকল ও নিম্নমানের ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের ব্যাপারে মানুষ সচেতন হলেও জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মান সম্পর্কে যথেষ্ট সাবধানতা নেওয়া হয় না। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, আসল ও নকল ওষুধ চেনার কিছু উপায় আছে:
১. লাইসেন্সপ্রাপ্ত ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনুন
সব সময় অনুমোদিত ও স্বীকৃত দোকান থেকে ওষুধ কেনা উচিত।
বিল নেওয়া বাধ্যতামূলক, যাতে ওষুধের উৎস সম্পর্কে প্রমাণ থাকে।
২. অনলাইনে ওষুধ কেনার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন
অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনলাইনে ওষুধ কেনার সময় জালিয়াতির সম্ভাবনা থাকে।
শুধুমাত্র সরকারি স্বীকৃত প্ল্যাটফর্ম থেকে ওষুধ কেনা উচিত।
৩. মূল্য ও অফারের দিকে খেয়াল রাখুন
অত্যন্ত সস্তা দামে ওষুধ বিক্রি হলে তা নকল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
প্রচুর ছাড় এবং আকর্ষণীয় অফারে ওষুধ কেনার আগে যাচাই করুন।
৪. প্যাকেজিং-এর পার্থক্য লক্ষ্য করুন
প্যাকেটের ছাপায় বানান ভুল বা নকশায় পরিবর্তন থাকলে সতর্ক হোন।
অস্বাভাবিক রঙ বা নকশা থাকলে তা নকল হতে পারে।
৫. ব্যাচ নম্বর, উৎপাদনের তারিখ ও মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করুন
প্রতিটি ওষুধের প্যাকেটে এই তথ্য থাকা বাধ্যতামূলক।
এগুলো না থাকলে ওষুধ কেনা এড়িয়ে চলুন।
বারকোড বা QR কোড যাচাই করুন
অধিকাংশ স্বীকৃত কোম্পানির ওষুধে বারকোড, ইউনিক কোড বা QR কোড থাকে।
যদি ওষুধের প্যাকেটে এসব না থাকে, তবে তা জাল হতে পারে।
ওষুধের গুণগত মান যাচাই করুন
জাল ওষুধের উপরের স্তর সাধারণত কুঁচকে বা অসমান হয়।
ওষুধের রঙ, গন্ধ ও আকৃতির কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন থাকলে সতর্ক হোন।
বিশ্বস্ত কোম্পানির ওষুধ বেছে নিন
নির্ভরযোগ্য ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর ওষুধ কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কঠোরভাবে অনুসরণ করা কোম্পানির ওষুধই গ্রহণ করা উচিত। ওষুধের লেবেলে থাকা অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (API) নির্ধারিত মাত্রার সঙ্গে মেলে কিনা তা যাচাই করুন।
সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে, যাতে তারা ভুলবশত নকল ওষুধ গ্রহণ না করেন। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির উচিত এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে নকল ওষুধের ব্যবসা বন্ধ করা যায়।