গ্রীষ্মকালে বাজারে কাঁচা আমের দেখা মেলা মানেই জিভে জল আনা। শুধু স্বাদের জন্যই নয়, কাঁচা আমের রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। ভিটামিন সি, কে, এ, বি৬ এবং ফোলেটের মতো প্রয়োজনীয় ভিটামিনে ভরপুর কাঁচা আম বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সহায়ক। হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে দৃষ্টিশক্তি উন্নত করা এবং ওজন কমানো—কাঁচা আমের গুণাগুণ অনেক। চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা আম খাওয়ার কিছু চমকপ্রদ উপকারিতা:
১. তীব্র তাপ থেকে রক্ষা:
গরমকালে শরীরকে ঠান্ডা রাখা এবং পানিশূন্যতা রোধ করা জরুরি। ব্যায়ামের পর এক গ্লাস কাঁচা আমের রস শরীরকে দারুণ সতেজ করে তোলে। এটি তীব্র তাপের প্রভাব কমায় এবং ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া সোডিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থের ভারসাম্য বজায় রাখে।
২. হজমের সমস্যার চিকিৎসা করে:
গ্রীষ্মকালে পেটের সমস্যা লেগেই থাকে। কাঁচা আম এই ক্রমবর্ধমান গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার একটি চমৎকার প্রাকৃতিক সমাধান। এটি পাচক রসের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, অ্যাসিডিটি, বুক জ্বালাপোড়া, সকালের অসুস্থতা এবং বমি বমি ভাবের মতো সমস্যা নিরাময় করে পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
৩. হৃদরোগের চিকিৎসা:
কাঁচা আমে থাকা প্রয়োজনীয় বি ভিটামিন নিয়াসিন এবং ফাইবার হৃদরোগের চিকিৎসায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৪. লিভারের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে:
লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং লিভারের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কাঁচা আম অত্যন্ত উপকারী। এটি পিত্ত অ্যাসিডের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে চর্বি শোষণ বৃদ্ধি করে।
৫. দাঁতের স্বাস্থ্য:
কাঁচা আম মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং মাড়ি থেকে রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে। এটি দাঁতের ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। শক্তিশালী ও পরিষ্কার দাঁত পেতে চাইলে খাদ্যতালিকায় কাঁচা আম যোগ করা উচিত।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
ভিটামিন সি ও এ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানে ভরপুর কাঁচা আম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে, ত্বক ও চুলকে সুস্থ রাখে এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও, এটি সর্দি-কাশি போன்ற বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরকে রক্ষা করে।
৭. রক্তের ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করে:
কাঁচা আম খেলে রক্তাল্পতা, রক্ত জমাট বাঁধা এবং হিমোফিলিয়ার মতো রক্তের ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য পাওয়া যায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কাঁচা আম কোলাজেন সংশ্লেষণকে উৎসাহিত করে, রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং নতুন রক্তকণিকা তৈরিতেও সহায়তা করে।