মাদ্রাসাগুলিতে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বিদেশি ফান্ড! ব্রিটিশ নাগরিক শামসুল হুদা খানকে খুঁজছে ইউপি এটিএস, পাকিস্তান যোগের সন্দেহ

উত্তরপ্রদেশের শান্ত কবির নগর জেলা এখন বড় এক অর্থ চক্রের তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে। রাজ্যের অ্যান্টি-টেরর স্কোয়াড (ATS) এক বিস্তৃত তদন্তে এমন এক আন্তর্জাতিক অর্থ চক্রের হদিস পেয়েছে, যা রাজ্যের বিভিন্ন মাদ্রাসায় অবৈধ পথে টাকা পৌঁছে দিচ্ছিল। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে শামসুল হুদা খান নামে এক ব্রিটিশ নাগরিকের নাম।

💰 মাদ্রাসায় অবৈধ বিদেশি অনুদান
এটিএস (ATS) সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শামসুল হুদা খান উত্তরপ্রদেশের শান্ত কবির নগর জেলার একাধিক এনজিও-র মাধ্যমে সরকারি অনুমতি ছাড়াই বিদেশি অনুদান পাঠাচ্ছিলেন। এই অর্থ প্রধানত ব্রিটেন এবং কিছু মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে আসত।

তদন্তকারীদের সন্দেহ, এই অর্থের একটি বড় অংশ পাকিস্তান এবং জম্মু-কাশ্মীরের চরমপন্থী সংগঠনগুলির সঙ্গে যুক্ত চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করত।

এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান,

“এটি কোনও সাধারণ অর্থ লেনদেন নয়। তদন্তে দেখা গিয়েছে, এই ফান্ডগুলি নির্দিষ্ট মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষার আড়ালে প্রচারমূলক এবং বিভাজনমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হচ্ছিল। সরকারিভাবে রেজিস্টার করা হয়নি এমন বহু NGO এই অর্থ পাচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।”

🌍 পাকিস্তান ও উগ্রপন্থী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগ
শামসুল হুদা খান লন্ডনের এক এনজিও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তিনি কয়েক বছর ধরেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তার নামে সক্রিয় ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর যোগাযোগ পাকিস্তানভিত্তিক কিছু ইসলামিক রিলিফ সংগঠনের সঙ্গে বেড়ে যায়, যা এটিএস-এর নজরে আসে।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে:

জম্মু-কাশ্মীর যোগ: এই অর্থের একটি অংশ জম্মু ও কাশ্মীরের কিছু উগ্রপন্থী নেটওয়ার্কে পৌঁছাচ্ছিল, যারা নিজেদের কার্যক্রম চালাতে এই তহবিল ব্যবহার করত।

কোটি কোটি টাকা: বেশ কয়েকটি সন্দেহজনক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা দেশে ঢুকেছে বলে জানা গেছে।

এটিএস সূত্রের দাবি, এই আর্থিক চক্রের পেছনে একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্য রয়েছে— ভারতের অভ্যন্তরে অস্থিরতা তৈরি করা এবং শিক্ষার মাধ্যমে ধর্মীয় বিভাজন বাড়ানো।

⚖️ ইউএপিএ এবং ইন্টারপোল নোটিশ
উত্তরপ্রদেশ এটিএস ইতিমধ্যেই শামসুল হুদা খানের বিরুদ্ধে বৈদেশিক অনুদান (FCRA) আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন (PMLA) এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ (UAPA) ধারায় মামলা দায়ের করেছে। তাঁকে শীঘ্রই ইন্টারপোলের মাধ্যমে নোটিশ পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, “এ ধরনের বেআইনি বিদেশি ফান্ডিং কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না। মাদ্রাসাগুলির ওপর কঠোর নজরদারি চালানো হচ্ছে, যাতে শিক্ষার নামে কোনও বেআইনি কার্যকলাপ না ঘটে।”

এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy