আমাদের শরীর, যা কিনা সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি আমরা, তার মধ্যেও এমন একটি স্থান রয়েছে যা কিনা ব্যাকটেরিয়ার আঁতুড়ঘর। আপাতদৃষ্টিতে পরিষ্কার মনে হলেও, জীবাণুদের বিচারে এটিই শরীরের সবচেয়ে অপরিষ্কার স্থান হিসেবে গণ্য হয়। তবে এর অর্থ এই নয় যে স্থানটির পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে, বরং অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় এখানে ব্যাকটেরিয়ার ঘনত্ব অনেক বেশি।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, শরীরের সবচেয়ে নোংরা স্থান কোনটি? কেউ হয়তো পায়ের কথা বলবেন, কারণ সারাদিনের ধুলোময়লা সেখানেই জমা হয়। কারো মনে হতে পারে মূত্রনালীর মুখ কিংবা পায়ুদ্বারের কথা। তবে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যার বিচারে এই ধারণাগুলো ভুল।
বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশে অন্যান্য যেকোনো স্থানের তুলনায় বহুগুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। আর সেই স্থানটি হলো আমাদের নাভি। হ্যাঁ, অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। নাভিকেই শরীরের সবচেয়ে অপরিচ্ছন্ন স্থান হিসেবে ধরা হয়। এখানে বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়া colony তৈরি করে এবং বংশবৃদ্ধি করে।
শরীরের এই বিশেষ স্থানটির নিয়মিত যত্ন নেওয়া তাই অত্যন্ত জরুরি। আমাদের শরীর এবং পোশাক থেকে সহজেই ময়লা নাভিতে প্রবেশ করতে পারে। এই ময়লা ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে, যা থেকে বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে।
নাভি আসলে মানব শরীরের একটি পুরনো ক্ষতচিহ্ন। মায়ের গর্ভে থাকাকালীন শিশু এই নাভির মাধ্যমেই পুষ্টি গ্রহণ করে। জন্মের পর মায়ের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলেই এই স্থানে একটি ক্ষতের সৃষ্টি হয়, যা সময়ের সাথে সাথে শুকিয়ে নাভিতে পরিণত হয়।
নিয়মিত নাভি পরিষ্কার না করলে সেখানে জমে থাকা ময়লা থেকে দুর্গন্ধ পর্যন্ত বের হতে পারে। তাই প্রতিদিন সাবান ও জল দিয়ে নাভি পরিষ্কার করা উচিত। এর পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন, আর তা হলো নাভিতে যখন তখন হাত দেওয়া উচিত নয়। অপরিষ্কার হাতে নাভি স্পর্শ করা উচিত নয় এবং নাভি স্পর্শ করার পর হাত ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত। সামান্য সচেতনতাই আপনাকে নাভির সংক্রমণ ও অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।