মেথি, যা সাধারণত রান্নার মশলা হিসেবে পরিচিত, ভেষজ চিকিৎসায় এর গুরুত্ব কিন্তু অনেক। নানান ঔষধি গুণে ভরপুর মেথি বীজ ওজন কমানো থেকে শুরু করে একাধিক রোগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চায়ের সাথে মিশিয়ে খেলে একদিকে যেমন ওজন কমে, তেমনই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়। এমনকি ডায়াবেটিসের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণেও মেথি অত্যন্ত কার্যকরী।
মেথি চা হয়তো অনেকের কাছে নতুন মনে হতে পারে। তবে মশলা চায়ের মতোই এটি তৈরি করা যায় খুব সহজে। মশলার মতো মেথিও প্রথমে গুঁড়ো করে নিন। এরপর ফুটন্ত জলের মধ্যে এই গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। স্বাদ বাড়াতে এর সাথে সামান্য মধুও মেশাতে পারেন। যারা চান, তারা চা পাতার সাথে কয়েকটি তুলসী পাতাও যোগ করতে পারেন। সব উপকরণ একসাথে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এরপর ছেঁকে নিয়ে সাধারণ চায়ের মতোই পান করুন মেথি চা।
জেনে নিন মেথি চায়ের কিছু অসাধারণ উপকারিতা:
১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: সুগার নিয়ন্ত্রণে মেথি চা অত্যন্ত কার্যকরী। পুষ্টিবিদদের মতে, মেথি চা শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত মেথি চা পান করলে ডায়াবেটিসের মতো রোগ সহজেই দূরে রাখা সম্ভব।
২. কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে কার্যকর: অ্যাসিডিটি বা হজমের যেকোনো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে মেথি চা দারুণ কাজ করে। এছাড়াও, মেথিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা পেট পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৩. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চা পান করলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর ফলে শরীরের হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমে।
৪. দ্রুত ওজন কমায়: শরীরের অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমাতে মেথি চায়ের জুড়ি মেলা ভার। সকালে খালি পেটে এক কাপ মেথি চা নিয়মিত পান করলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং একই সাথে শরীরের অতিরিক্ত মেদও ঝরে যায়।
৫. কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করে: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চা পান করলে কিডনি পরিষ্কার থাকে। এর ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।
সুতরাং, মশলার গুণ আর চায়ের স্বাদ—এই দুইয়ের মেলবন্ধনে তৈরি মেথি চা আপনার স্বাস্থ্য রক্ষায় এক অসাধারণ পানীয় হতে পারে। রোগ মুক্তি থেকে শুরু করে ওজন কমানো পর্যন্ত, মেথি চায়ের উপকারিতা অনেক। তাই আর দেরি না করে, আজই আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করুন এই স্বাস্থ্যকর পানীয়টি।