স্মার্টনেস কেবল বাহ্যিক চাকচিক্য বা দামি পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি মূলত একটি অভ্যন্তরীণ মানসিক ব্যাপার। নিজেকে স্মার্টভাবে উপস্থাপন করতে হলে নিজের মধ্যে কিছু ছোটখাটো পরিবর্তন আনা জরুরি। কিছু ক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করাও বুদ্ধিমানের কাজ। খুব সাধারণ কিছু কৌশল আয়ত্ত করে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন স্মার্টনেসের অধিকারী।
১. বুঝেশুনে কথা বলুন: অতিরিক্ত কথা বলার অভ্যাস ত্যাগ করুন। প্রয়োজন অনুযায়ী, গুছিয়ে এবং স্পষ্ট করে কথা বলুন। কখন, কোথায়, কী বলতে হবে, সেই বিষয়ে সচেতন থাকুন। আপনার বক্তব্য যেন সহজেই বোধগম্য হয়।
২. নিঃশব্দে ধীরে খান: শব্দ করে খাবার গ্রহণ করা অন্যদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। নীরবভাবে এবং ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার অভ্যাস করুন। খাবার সময় যতটা সম্ভব কম কথা বলুন।
৩. রুচিশীল পোশাক পরিধান করুন: ট্রেন্ডি বা হালফ্যাশনের পোশাক পরা মানেই স্মার্ট হওয়া নয়। আসল বিষয় হল পোশাকটি আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে মানানসই কিনা। পোশাক নির্বাচনে ভুল করলে আপনার স্মার্টনেস অনেকাংশে কমে যাবে। তাই নিজের রুচি ও ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করুন।
৪. সনাতনী বা চিরন্তন পোশাক বেছে নিন: হালফ্যাশনের পোশাক নিয়ে দ্বিধা থাকলে শাড়ি, সাধারণ সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, ফর্মাল শার্ট, প্যান্ট, স্ট্রেইট কাট জিন্স, পোলো টি-শার্টের মতো চিরায়ত পোশাক বেছে নিতে পারেন। রঙের ক্ষেত্রে হালকা রং সাধারণত সবার সাথেই মানিয়ে যায়।
৫. খাবার গ্রহণের নিয়মাবলী জানুন: খাবার খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন রয়েছে। চামচ, কাঁটা চামচ, ছুরি ব্যবহারের পদ্ধতি, ন্যাপকিন ব্যবহার এবং কোন খাবারের পর কোনটি পরিবেশন করা হয়, তা জেনে নিন। আপনার পরিশীলিত ভোজনরীতি আপনার স্মার্টনেসকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।
৬. ন্যূনতম সৌজন্যতাবোধ বজায় রাখুন: প্রতিটি পরিস্থিতিতেই কিছু সাধারণ সৌজন্যতা মেনে চলা উচিত। এটি যেমন আপনার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়, তেমনই স্মার্টনেসও প্রকাশ করে। উচ্চস্বরে কথা বলা পরিহার করুন, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে। তাড়াহুড়ো করে না হেঁটে শান্তভাবে চলার চেষ্টা করুন। কারো সাহায্য নিলে ধন্যবাদ জানাতে ভুলবেন না এবং ভুল করে কাউকে বিরক্ত করলে ‘দুঃখিত’ বলুন।
৭. হাসিমুখে সুন্দরভাবে কথা বলুন: হাসিমুখে ও আন্তরিকভাবে কথা বলা স্মার্টনেসের অন্যতম পরিচায়ক। তবে অবশ্যই অকারণে বা উচ্চস্বরে হাসা উচিত নয়। সবার সাথে স্মিত হেসে কথা বলুন। এমনকি যদি কেউ বিরক্তিকরও হয়, আপনার ব্যবহারে যেন বিরক্তি প্রকাশ না পায়। আপনার সাথে কথা বলে যেন কেউ রুঢ়তা অনুভব না করে।
৮. ভালো ব্যবহার করুন: যেকোনো পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া স্মার্টনেসের গুরুত্বপূর্ণ দিক। আপনার মানসিক অবস্থা খারাপ থাকলেও অন্যদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। সহজে বিরক্ত বা রাগান্বিত হবেন না। ধৈর্য ধরে এবং শান্তভাবে সবার সাথে ভালো আচরণ করুন। আপনার প্রতিটি ভালো ব্যবহার আপনাকে একজন স্মার্ট মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।
এই সাধারণ কৌশলগুলি অবলম্বন করে আপনিও আপনার ব্যক্তিত্বে স্মার্টনেসের ছোঁয়া লাগাতে পারেন এবং সকলের কাছে নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।