ভালোবাসা সত্যিই রূপ বা অর্থ-সম্পদের উপর নির্ভরশীল নয়, এমনটা আমরা শুনে থাকি। তবে প্রথম দর্শনে একে অপরের প্রতি আকর্ষণ তৈরিতে বাহ্যিক সৌন্দর্য একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। চেহারা দেখেই প্রাথমিক পছন্দ তৈরি হয়, এরপর ধীরে ধীরে আলাপ-আলোচনা ও ভাবনার আদান-প্রদানের মাধ্যমে ভালোবাসার জন্ম নেয়। তবে, কে কখন কাকে পছন্দ করবেন, তা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়।
প্রত্যেকেরই চাওয়া থাকে তাদের জীবনসঙ্গী যেন সুন্দর, স্মার্ট এবং গুণী হন। কিন্তু যারা তথাকথিত সুদর্শন নন, তাদের কি তবে একাই জীবন কাটাতে হবে? একদমই নয়! বরং এক নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, কম সুদর্শন পুরুষদের সঙ্গেই নারীরা বেশি সুখী হন।
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, যে সম্পর্কে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি সুন্দরী হন, সেই সম্পর্ক সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। গবেষকরা টেক্সাসে নতুন বিবাহিত ১১৩ জন দম্পতিকে নিয়ে একটি বিশ্লেষণ করেন।
এই সমীক্ষায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের চেহারার ওপর ভিত্তি করে নম্বর দেওয়া হয়। ফলাফলে দেখা যায়, স্ত্রীর তুলনায় সৌন্দর্যে পিছিয়ে থাকা স্বামীরা তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অনেক বেশি যত্নশীল হন। তারা নিয়মিত উপহার দেন, ঘরের কাজে সাহায্য করেন, নিজেদেরকে নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন এবং ভালোবাসার নিত্যনতুন ধরণ আবিষ্কারে বেশি মনোযোগী হন।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, কম আকর্ষণীয় দেখতে স্বামীরা তাদের সম্পর্কের প্রতি বেশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন। একইসঙ্গে তারা তাদের স্ত্রীর সৌন্দর্যের গুরুত্ব বোঝেন এবং তাকে খুশি রাখার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকেন।
অন্যদিকে, গবেষণায় একটি বিপরীত চিত্রও উঠে এসেছে। দেখা গেছে, যদি কোনো দম্পতির পুরুষ সঙ্গী বেশি আকর্ষণীয় হন, সেক্ষেত্রে নারী সঙ্গীরা হীনমন্যতায় ভুগতে পারেন। এই অনুভূতি তাদের সম্পর্কের উপর নানাভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক তানিয়া রেনোল্ডস এই গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে বলেন, “গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, আকর্ষণীয় চেহারার স্বামীর উপস্থিতি অনেক সময় সম্পর্কের জন্য খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এর বিপরীতে, কম আকর্ষণীয় দেখতে স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের খুশি রাখার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যান।”
এই গবেষণা নিঃসন্দেহে সম্পর্কের চিরাচরিত ধারণাকে কিছুটা হলেও নাড়া দিয়েছে। বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে যত্ন, প্রতিশ্রুতি এবং সঙ্গীকে খুশি রাখার আন্তরিক প্রচেষ্টাই যে একটি দীর্ঘস্থায়ী ও সুখী সম্পর্কের মূল ভিত্তি, তা আরও একবার প্রমাণিত হলো এই গবেষণায়।