রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আর এই রোগের প্রধান বাহক হল এডিস মশা। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় এডিস মশা শুধু দিনের বেলাতেই কামড়ায়। তবে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। প্রাণিবিজ্ঞানী ও কীটতত্ত্ববিদদের মতে, এডিস মশা রাতেও কামড়াতে পারে এবং উজ্জ্বল আলোতেও এরা সক্রিয় থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এডিস মশা দিনের আলোর পাশাপাশি রাতে কৃত্রিম আলোতেও সক্রিয় থাকতে পারে। তবে তারা ভরদুপুরের তীব্র রোদ এড়িয়ে আলো-আঁধারি পরিবেশ বেশি পছন্দ করে। এই কারণে ভোরবেলা সূর্যোদয়ের সময় এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের আশেপাশে এডিস মশার কামড়ানোর ঝুঁকি বেশি থাকে। এমনকি রাতে ঘরের কৃত্রিম আলো-আঁধারিতেও এই মশা হানা দিতে পারে।
এডিস মশা মূলত স্বচ্ছ পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে। ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে হলে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করা জরুরি। এর জন্য বাড়ির আশেপাশে এবং ঘরের ভেতরে জমে থাকা জল নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
এডিস মশা চেনার উপায়:
এডিস মশা অন্যান্য মশার তুলনায় সহজেই চেনা যায়। এদের গায়ের রং কালো এবং পায়ে ও পাশে সাদা ডোরাকাটা দাগ থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল, এডিস মশার মাথার পেছনের দিকে ওপরের অংশে কাস্তের মতো সাদা দাগ দেখা যায়। অন্যান্য মশার ক্ষেত্রে এই সাদা দাগ সাধারণত মাঝ বরাবর থাকে। এই দুটি বৈশিষ্ট্য দেখে এডিস মশাকে চিহ্নিত করা সম্ভব।
ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষিত থাকতে যা করবেন:
ডেঙ্গুর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কয়েকটি সহজ পদক্ষেপের মাধ্যমে এডিস মশার কামড় এড়ানো এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
১. দিনের বেলাতেও ফুলপ্যান্ট এবং মোজা ব্যবহার করুন।
২. শরীর ঢাকা থাকে এমন ফুলহাতা জামা পরিধান করুন।
৩. ছোট শিশুদের ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা অবশ্যই পরাবেন।
৪. দিনের বেলা ও রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন।
৫. শরীরের খোলা অংশে মশা তাড়ানোর স্প্রে, লোশন বা তেল ব্যবহার করুন।
৬. ঘরের দরজা ও জানালায় মশারোধী নেট লাগান।
৭. মশা তাড়াতে স্প্রে, লোশন, ক্রিম, কয়েল বা ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা এবং বাড়ির আশেপাশে যেকোনো পাত্রে জমে থাকা জল নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
৯. ঘরের বাথরুমে জল জমতে দেবেন না।
১০. বাড়ির ছাদে বা বাগানের টবে অথবা অন্য কোনো পাত্রে যাতে জল না জমে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
সচেতনতাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান হাতিয়ার। তাই এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধে এবং এর কামড় থেকে বাঁচতে সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।