বার্গার কিংবা পিজ্জার মধ্যে কয়েক টুকরো সসেজ ও সালামি যোগ করলে খাবারের স্বাদ যে দ্বিগুণ বেড়ে যায়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ছোট থেকে বড় অনেকেই বেশ মজা করেই এই প্রক্রিয়াজাত মাংস খেয়ে থাকেন। তবে এই সামান্য সংযোজন আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে, এমনটাই জানাচ্ছে সাম্প্রতিক গবেষণা।
হ্যামিল্টনের একদল বিজ্ঞানী কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়ার মধ্যে একটি সুস্পষ্ট সংযোগ খুঁজে পেয়েছেন। তবে অবাক করার বিষয় হলো, একই সমীক্ষায় অপ্রক্রিয়াজাত লাল মাংস বা হাঁস-মুরগির মাংসের সঙ্গে এই ধরনের কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাটি পাঁচটি মহাদেশের ২১টি দেশের ১,৩৪,২৯৭ জন মানুষের খাদ্যতালিকা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। গবেষকরা প্রায় এক দশক ধরে এই অংশগ্রহণকারীদের পর্যবেক্ষণ করেছেন। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ শেষে তারা জানতে পেরেছেন, যারা সপ্তাহে ১৫০ গ্রাম বা তার বেশি প্রক্রিয়াজাত মাংস খেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৪৬ শতাংশের বেশি মানুষের কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।
ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (পিএইচআরআই)-এর প্রধান গবেষক মাহশিদ দেহহান এই প্রসঙ্গে বলেন, “প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে অল্প পরিমাণে অপ্রক্রিয়াজাত মাংস গ্রহণ করলে তা ক্ষতিকারক হওয়ার সম্ভাবনা কম।”
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের খাদ্যগ্রহণের অভ্যাস কত ঘন ঘন, তা বিস্তারিতভাবে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। পাশাপাশি, তাদের মৃত্যুর হার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতো বড় ঘটনাগুলির তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই তথ্য বিশ্লেষণ করেই গবেষকরা মাংস খাওয়ার ধরণ এবং হৃদরোগের ঘটনা ও মৃত্যুর হারের মধ্যেকার সম্পর্কটি স্পষ্ট করতে সক্ষম হয়েছেন।
গবেষকদের বিশ্বাস, এই গবেষণার ফলাফল এটাই ইঙ্গিত দেয় যে প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং এর পরিমাণ সীমিত রাখা প্রয়োজন। তাই যদি আপনিও প্রক্রিয়াজাত মাংস ভালোবাসেন, তবে নিজের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের কথা অবশ্যই ভাবুন।