নতুন সংসার, ভবিষ্যতের ভাবনা: খরচ কমানোর সহজ টিপস

জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয় বিয়ের মাধ্যমে। তবে নতুন সংসার পাতার সঙ্গে সঙ্গেই ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখা অপরিহার্য। নতুন বিয়ে মানেই যেমন তেমন খরচ করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বরং এখন থেকেই সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই মিতব্যয়ী হতে হবে এবং খরচ কমিয়ে ভবিষ্যতের জন্য অর্থ জমাতে সচেষ্ট হতে হবে। নতুন সংসারের খরচ কমিয়ে সঞ্চয় করার কিছু সহজ উপায় জেনে নেওয়া যাক:

যেভাবে খরচ কমাবেন:

প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়: শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিস কিনুন। অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা পরিহার করুন, কারণ অপ্রত্যাশিত খরচ যেকোনো সময় আসতে পারে।
ঘরোয়া খাবারে অভ্যস্ত হোন: স্বাস্থ্যকর থাকার পাশাপাশি বাইরের খাবারের খরচ কমাতে ঘরে তৈরি খাবার খান।
অফিসে খাবার নিয়ে যান: বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে গেলে বাইরের খাবারের খরচ বাঁচবে এবং খাবার স্বাস্থ্যকরও হবে।
পোশাকের প্রয়োজন বিবেচনা করুন: নতুন বিয়ে মানেই দেদার কেনাকাটা নয়। প্রয়োজন অনুযায়ী পোশাক কিনুন এবং সম্ভব হলে আগের পোশাক ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
পার্লারে ঘন ঘন নয়: নতুন বিয়ে হলেও ঘন ঘন পার্লারে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। ঘরোয়া উপায়ে সৌন্দর্যচর্চা করুন।
উপহারের বাজেট কমান: লোক দেখানো দামি উপহার না দিয়ে সাধ্যের মধ্যে আন্তরিক উপহার দিন।
ভ্রমণের পরিকল্পনা স্থগিত রাখুন: আপাতত দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিন। কাছে কোথাও কম খরচে ঘুরে আসতে পারেন অথবা সেই টাকা ভবিষ্যতের জন্য জমান।
যেভাবে টাকা জমাবেন:

আয়ের অংশ সঞ্চয় করুন: আপনার আয়ের অন্তত ৫ থেকে ১০ শতাংশ নিয়মিত জমানোর চেষ্টা করুন। শেয়ার বাজারের অস্থিরতা বিবেচনা করে অভিজ্ঞ না হলে এই সময় বিনিয়োগ না করাই ভালো। বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সঞ্চয়ের জন্য অর্থ আলাদা করে রাখুন।
খরচের হিসাব রাখুন: প্রতি সপ্তাহে আপনার বাজেট এবং খরচের হিসাব মেলান। কোথায় বেশি খরচ হয়েছে তা চিহ্নিত করুন এবং পরবর্তীতে তা এড়ানোর চেষ্টা করুন।
সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা করুন: বেতন পাওয়ার পর বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য জরুরি খরচ মেটানোর পর অবশিষ্ট অর্থের ১০ শতাংশ সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা করুন। এটি বছরের শেষে বিভিন্ন প্রয়োজনে কাজে লাগবে।
বাজেট মেনে চলবেন যেভাবে:

সাপ্তাহিক বাজার করুন: সপ্তাহে এক বা দু’দিন তালিকা ধরে হিসেব করে বাজার করুন। অযথা খরচ এড়াতে সতর্ক থাকুন।
বিজ্ঞাপন ও সস্তা জিনিসের লোভ এড়িয়ে চলুন: আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন বা সস্তা জিনিসের লোভে পড়ে অপ্রয়োজনীয় কিছু কিনবেন না।
অনলাইন শপিং নিয়ন্ত্রণ করুন: নিজেকে সামলাতে না পারলে অনলাইন শপিং সাইটে ঢোকা বন্ধ রাখুন।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় করুন: যে ঘরে থাকবেন না, সেখানকার আলো ও পাখা বন্ধ রাখুন। সারাদিন কম্পিউটার চালু রাখবেন না।
পরিবহন খরচ কমান: প্রয়োজন না হলে সিএনজি বা উবারে না চড়ে হেঁটে বা সাইকেলে কাছাকাছি কাজ সেরে ফেলুন।
নতুন সংসার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আর্থিক পরিকল্পনা এবং মিতব্যয়ী হওয়ার মাধ্যমে আপনারা দুজনেই একটি সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারেন। তাই এখন থেকেই সচেতন হন এবং সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি করুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy