তেলাপোকার উপদ্রব একটি অতি সাধারণ সমস্যা, যা অনেক বাড়িতেই দেখা যায়। এই ছোট্ট বিরক্তিকর প্রাণীটি শুধু খাবার নষ্ট করে না, পাশাপাশি ঘরকেও অপরিষ্কার করে তোলে এবং বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়ায়। রান্নাঘর ছাড়াও বাথরুম, সিঙ্কের নিচে এবং ক্যাবিনেটের আনাচে-কানাচে তেলাপোকার বাসা বাঁধার প্রিয় জায়গা। ঘরে শিশু বা পোষা প্রাণী থাকলে কীটনাশক ব্যবহার করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে চিন্তা নেই! কীটনাশক ছাড়াই তেলাপোকার উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় জেনে নিন:
দারুচিনির গুঁড়া: তেলাপোকা তাড়ানোর একটি সহজ উপায় হলো দারুচিনির গুঁড়া। রান্নাঘরের কোণে বা যেখানে তেলাপোকার আনাগোনা বেশি, সেখানে দারুচিনির গুঁড়া ছিটিয়ে দিন। এর তীব্র গন্ধ তেলাপোকাদের দূরে রাখবে।
বোরিক অ্যাসিড ও চিনি: বোরিক অ্যাসিড তেলাপোকার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বোরিক অ্যাসিডের সাথে সামান্য চিনি মিশিয়ে তেলাপোকার সম্ভাব্য বাসস্থানের আশেপাশে ছিটিয়ে দিন। চিনি তেলাপোকাকে আকৃষ্ট করবে এবং বোরিক অ্যাসিড তাদের ধ্বংস করবে। তবে খেয়াল রাখবেন, এই মিশ্রণ যেন শিশু ও পোষা প্রাণীদের নাগালের বাইরে থাকে।
সাদা ভিনেগার ও গরম জল: গরম জলের সাথে সমান পরিমাণে সাদা ভিনেগার মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে সিঙ্কের ড্রেনে ঢেলে দিন। এটি পাইপের ভেতরে লুকিয়ে থাকা তেলাপোকাদের দূর করতে সহায়ক হবে। এছাড়াও, এই দ্রবণটি সিঙ্ক ও চুলার আশেপাশে স্প্রে করতে পারেন।
লেবুর রস ও বেকিং সোডা: একটি লেবুর রস, দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা এবং এক লিটার গরম জল একসাথে মিশিয়ে নিন। এই দ্রবণটি স্প্রে বোতলে ভরে তেলাপোকার আনাগোনা বেশি এমন জায়গাগুলোতে স্প্রে করুন। এটি তেলাপোকা তাড়াতে কার্যকর।
এসেনশিয়াল অয়েল: কিছু এসেনশিয়াল অয়েলের তীব্র গন্ধ তেলাপোকা সহ্য করতে পারে না। পেপারমিন্ট, ল্যাভেন্ডার বা ইউক্যালিপটাস অয়েলের মতো এসেনশিয়াল অয়েল জলের সাথে মিশিয়ে তেলাপোকা প্রবণ এলাকায় স্প্রে করুন। এছাড়াও, কটন বল তেলে ভিজিয়ে তেলাপোকা দেখার স্থানে রেখে দিতে পারেন। সারারাত রেখে পরদিন পরিষ্কার করে ফেলুন।
নিমপাতা: নিমপাতা একটি প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। ঘর ও রান্নাঘরের আনাচে-কানাচে কিছু নিমপাতা ছড়িয়ে দিন। তিন দিন পর পাতাগুলো সরিয়ে ফেলুন। এছাড়াও, নিম অয়েলের সাথে গরম জল মিশিয়ে স্প্রে করলেও তেলাপোকার উপদ্রব কমাতে উপকার পাবেন।
এই সহজ ঘরোয়া উপায়গুলো অবলম্বন করে আপনি কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই আপনার বাড়িকে তেলাপোকার উপদ্রব থেকে মুক্ত রাখতে পারেন। নিয়মিত এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে তেলাপোকার বংশবৃদ্ধি রোধ করাও সম্ভব।