চায়ের আড্ডায় বিস্কুট? সাবধান! ডেকে আনছেন ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি

সকাল-বিকালের চায়ের সঙ্গে দু’চারটা বিস্কুট অথবা হালকা খিদে মেটাতে সহজলভ্য বিস্কুট—এমন অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। বিস্কুট অনেকের কাছেই প্রিয় একটি স্ন্যাকস, তাই অফিস কিংবা বাসায় নিয়মিত এর চল দেখা যায়। এমনকি ছোট বাচ্চাদের হাতেও তুলে দেওয়া হচ্ছে বিস্কুট, স্কুলের টিফিনেও দেওয়া হয় এই শুকনো খাবার। তবে জানেন কি, অতিরিক্ত বিস্কুট খাওয়ার অভ্যাস ডেকে আনতে পারে ডায়াবেটিসের মতো মারাত্মক বিপদ? রক্তে হঠাৎ করেই বেড়ে যেতে পারে শর্করার পরিমাণ, এমনকি বাড়তে পারে হৃদরোগের ঝুঁকিও।

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই স্ন্যাকস হিসেবে বিস্কুটের জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশেষ করে বাঙালির চায়ের আড্ডা তো বিস্কুট ছাড়া একেবারে জমে না। বন্ধুদের সঙ্গে চায়ের পেয়ালায় চুমুক আর পাশে কয়েকটা বিস্কুট—এই অভ্যাস ভবিষ্যতে ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

ক্যানসার এপিডমোলজি, বায়োমার্কাস অ্যান্ড প্রিভেনসন্স (Cancer Epidemiology, Biomarkers & Prevention) নামের একটি মার্কিন পত্রিকার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, অতিরিক্ত বিস্কুট সেবন ডেকে আনতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। মার্কিন চিকিৎসক ও গবেষকদের দাবি, বিস্কুট মূলত তৈরি হয় ময়দা দিয়ে। ময়দায় ভিটামিন প্রায় থাকেই না বললেই চলে। বিস্কুট খাওয়ার ফলে শরীরে অস্বাভাবিক স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং এমনকি ক্যান্সারের মতো রোগও বাসা বাঁধতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ময়দায় এমনিতেই ফাইবারের পরিমাণ কম থাকে। বিস্কুট তৈরির প্রক্রিয়ায় সেই ফাইবার আরও কমে যায়। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত বিস্কুট খাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে শরীরের ওজন বাড়তে থাকে, যা এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।

দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চালানো একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সুইডেনে ৬০ হাজারেরও বেশি মহিলা পেটের নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগেরই অতিরিক্ত পরিমাণে বিস্কুট খাওয়ার অভ্যাস ছিল। বিস্কুটে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। এর ফলস্বরূপ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, শিশুদের মধ্যে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং হঠাৎ করেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

তাই বিস্কুট খান বুঝেশুনে, পরিমিত পরিমাণে। আর আপনার আদরের শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার স্বার্থে তাদের বিস্কুট দেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। স্বাস্থ্য সচেতন হোন, সুস্থ জীবন যাপন করুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy