তীব্র গরমে নাজেহাল বঙ্গবাসী। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি কষ্টের শিকার হচ্ছেন শ্বাসকষ্টের রোগীরা, বিশেষত যারা হাঁপানি বা অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন। ধুলোবালি এবং শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে এই সময় তাঁদের কষ্ট আরও বাড়ে। বহু ওষুধ খেয়েও এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকেই। তবে, ঘরোয়া কিছু টোটকাতেই হাঁপানি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কাঁচা পেঁয়াজ যোগ করলে অ্যাজমার সমস্যা থেকে উল্লেখযোগ্য আরাম পাওয়া যেতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে যারা অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন এবং ওষুধ খেয়েও তেমন উপকার পাচ্ছেন না, গরমকাল আসা মাত্রই তাঁদের কষ্ট দ্বিগুণ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে ঘরোয়া টোটকা এক নতুন আশার আলো দেখাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাজমার উপশমে কাঁচা পেঁয়াজ অত্যন্ত কার্যকরী।
কাঁচা পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এতে থাকা ভিটামিন সি ও সালফার যে কোনও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ দ্রুত নিরাময় করতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, পেঁয়াজে ফ্ল্যাভোনয়েডের আকারে থিওসালফিনেট এবং অ্যান্থোসায়ানিন নামক উপাদানও থাকে, যা অ্যাজমার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
তবে, শুধু কাঁচা পেঁয়াজ খেলেই সম্পূর্ণ উপকার পাওয়া যাবে না। এর সঙ্গে আরও কয়েকটি প্রাকৃতিক উপাদান মেশানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ঘরোয়া টোটকাটি তৈরি করতে যা যা লাগবে:
কাঁচা পেঁয়াজ: ৫০০ গ্রাম
মধু: ৮ টেবিল চামচ
ব্রাউন সুগার: ৩৫০ গ্রাম
পাতিলেবু: ২ টি
জল: ৫ গ্লাস
প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমে একটি পাত্রে চিনি গরম করে গলিয়ে নিন। এরপর তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়তে থাকুন। কিছুক্ষণ পর পাত্রে জল ঢেলে দিন এবং ভালো করে ফুটিয়ে নিন। যখন জল শুকিয়ে এক তৃতীয়াংশে এসে পৌঁছাবে, তখন সেটি নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে তাতে পাতিলেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে একটি কাঁচের বোতলে ভরে রাখুন।
সেবন বিধি:
ছোটরা প্রতিদিন এক চামচ করে খাবার আগে এটি সেবন করবে। প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন এক টেবিল চামচ করে খাবার আগে খাবেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কয়েকদিন এই ঘরোয়া টোটকাটি নিয়ম করে খেলে রোগী নিজেই এর উপকারিতা বুঝতে পারবেন।
এই ঘরোয়া পদ্ধতি অ্যাজমার কষ্ট লাঘবে কতটা কার্যকরী হয়, তা সময়ই বলবে। তবে, প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের ফলে এর তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। যারা দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন, তারা একবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করে দেখতে পারেন। তবে, কোনও রকম ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যিক।