একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, যত নামীদামী ব্র্যান্ডের বিয়ার হোক না কেন, এর বোতলের রং বাদামী কিংবা সবুজ হয়। কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে, কেন বিয়ারের বোতলের রং বাদামী বা সবুজ হয়? কেন সাদা রঙের হয় না? এর পেছনে রয়েছে একটি интересная история (interesting history)।
ইতিহাস বলছে, হাজার বছর আগে মিশরে প্রথম বিয়ার তৈরি শুরু হয়। তবে, উনিশ শতকেই প্রথম বিয়ার বোতলবন্দী করা শুরু হয়। সেই সময় বিয়ার প্রস্তুতকারকরা এই পানীয়ের স্বাদ ও গন্ধ ঠিক রাখার জন্য স্বচ্ছ কাচের বোতলে বিয়ার রাখা শুরু করেন।
আর এখানেই শুরু হয় সমস্যা। বিয়ার প্রস্তুতকারকরা লক্ষ্য করেন যে সাদা কাচের বোতলে রাখা বিয়ার সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এসে অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার স্বাভাবিক স্বাদ ও গন্ধ হারাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়।
দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর দেখা যায়, গাঢ় রঙের বোতল সূর্যের ক্ষতিকারক অতি বেগুনি রশ্মিকে অনেকাংশে আটকাতে সক্ষম। আর বাদামী রঙের বোতল এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়। এরপর থেকেই বিয়ার উৎপাদকরা বাদামী রঙের বোতলে বিয়ার বোতলজাত করা শুরু করেন।
বিয়ারের চাহিদা যখন বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকে, তখন বাজারে দেখা দেয় বাদামী রঙের বোতলের অভাব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই সংকট আরও প্রকট হয়ে ওঠে। সেই সময়, বিকল্প হিসেবে গাঢ় সবুজ রঙের বোতলে বিয়ার রাখা শুরু হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, সবুজ রঙের বোতলও বিয়ারের গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ রাখতে বেশ কার্যকর। সেই সময় থেকেই বাদামী এবং সবুজ রঙের বিয়ারের বোতলের প্রচলন শুরু হয় এবং আজও তা অব্যাহত রয়েছে।
বর্তমানে, আধুনিক বিয়ার প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো কাচের বোতলের অভ্যন্তরে অতিবেগুনি রশ্মি রোধক কোটিংয়ের (UV resistant coating) ব্যবহার করে। এর ফলে, বোতলের রং হালকা হলেও বিয়ারের স্বাদ ও গুণাগুণ বজায় থাকে। তবে ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং গ্রাহকদের চাক্ষুষ পরিচিতির জন্য, বেশিরভাগ জনপ্রিয় বিয়ার ব্র্যান্ড এখনও বাদামী অথবা সবুজ রঙের বোতল ব্যবহার করে থাকে।