অতিরিক্ত ওজন নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই একটি উদ্বেগের কারণ। শুধু শারীরিক সৌন্দর্যহানি নয়, এই বাড়তি ওজন শরীরে বাসা বাঁধতে পারে একাধিক জটিল রোগের। যা অনেক সময় ডেকে আনতে পারে অকালমৃত্যুও।
তাই অনেকেই এই বাড়তি মেদ ঝরাতে ডায়েট ও শরীরচর্চার পথে হাঁটেন। তবে ওজন কমানোর সময় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই মনে রাখা উচিত। কারণ, বেশিরভাগ মানুষই কেবল তাদের কাঙ্ক্ষিত ওজন পাওয়ার দিকেই মনোযোগ দেন। নিজেদের সামগ্রিক সুস্থতার কথা তারা অনেক সময় ভুলে যান। এর ফলস্বরূপ দেখা দিতে পারে নানা স্বাস্থ্য বিষয়ক জটিলতা।
আপনিও যদি ওজন কমানোর চেষ্টা করে থাকেন, তাহলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে মেদ ঝরাতে এই তিনটি বিষয় অবশ্যই স্মরণে রাখুন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত:
প্রতিদিনের খাবারে ফল যোগ করুন:
সাধারণত ওজন কমানোর চেষ্টাকালে প্রক্রিয়াজাত চিনি বা রিফাইন্ড সুগার কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে ফলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক চিনি আপনাকে সারাদিন কর্মক্ষম থাকতে শক্তি যোগায়। তাই নিজেকে সতেজ রাখতে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।
চলাফেরা বৃদ্ধি করুন:
আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপ ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা কেবল ওজনই বাড়ায় না, পাশাপাশি বেশ কিছু মারাত্মক রোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি করে। আপনি যদি প্রতিদিন এক ঘণ্টা ব্যায়ামও করেন, তবুও দিনের অন্যান্য সময়ে আপনার শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ানো প্রয়োজন। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করা, ফোনে কথা বলার সময় হাঁটাচলা করা, অফিস থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরা – এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলি আপনার মেটাবলিজম বাড়াতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
নিজেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রেটেড রাখুন:
আপনি ওজন কমানোর চেষ্টা করুন বা না করুন, শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলীয় পদার্থ সরবরাহ করা অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় আমরা ক্ষুধা এবং তেষ্টার মধ্যে পার্থক্য করতে পারি না। তাই যখনই ক্ষুধা অনুভব হবে, সঙ্গে সঙ্গে কোনও খাবার না খেয়ে প্রথমে জল পান করুন। এর ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমবে এবং ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পাবে। এছাড়াও, জল পান করার কারণে বারবার ক্ষুধার অনুভূতিও কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতিদিন অন্তত ২.৫ লিটার জল পান করা উচিত। তবে আবহাওয়া, আপনার শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভর করে এই জলের পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে।
সুতরাং, ওজন কমানোর যাত্রায় শুধু লক্ষ্য স্থির করাই যথেষ্ট নয়। একটি স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই উপায়ে ওজন কমাতে এই তিনটি বিষয়কে সমান গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য।