প্রিয়জনকে হারানোর ভয় কমবেশি সকলের মধ্যেই কাজ করে। তাই সঙ্গী যদি বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গে বেশি মেলামেশা করেন, অনেকেই তাতে অস্বস্তি বোধ করেন। পুরুষ ও নারী উভয়েই নিজেদের সঙ্গীকে বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গে দেখলে ঈর্ষান্বিত হন, এমন দৃশ্য বাস্তবেও প্রায়ই দেখা যায়।
তবে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা বলছে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা তাদের স্বামীর নারী বন্ধুকে নিয়ে বেশি ঈর্ষান্বিত হন। সম লিঙ্গের বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে এমন ঈর্ষা সাধারণত দেখা যায় না। সমীক্ষা অনুযায়ী, নারীদের মধ্যে এই বিষয়ে ঈর্ষার প্রবণতা বেশি থাকলেও পুরুষরাও পিছিয়ে নেই। স্ত্রীর কোনো সুদর্শন পুরুষ বন্ধু থাকলে স্বামীরাও শুধু ঈর্ষান্বিতই হন না, বরং চিন্তায়ও পড়ে যান। মূলত উভয় পক্ষই চান না তাদের প্রিয়জন বিপরীত লিঙ্গের বন্ধুর সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠ হোক।
বিশেষ করে যারা সঙ্গীকে নিয়ে অত্যন্ত রক্ষণশীল, তারা এই বিষয়ে আরও বেশি চিন্তিত থাকেন। তবে নারীরা এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয়। স্বামীর কোনো নারী বন্ধু থাকলে তাদের উদ্বেগের শেষ থাকে না। সমীক্ষা আরও বলছে, স্বামী অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বেন কিনা, তা নিয়ে স্ত্রীদের যতটা না চিন্তা থাকে, তার চেয়ে বেশি ভাবনা থাকে স্বামী অন্য কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করবেন কিনা, বিশেষ করে যদি সেই নারী বন্ধু সুন্দরী ও আকর্ষণীয় হন।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই সমীক্ষাটি পরিচালনা করেছিলেন। সমীক্ষা শেষে তারা মনে করছেন, এটি মূলত মস্তিষ্কজনিত একটি বিষয়। মস্তিষ্কের প্রধান দুটি অংশ—সিঙ্গুলেট কর্টেক্স এবং ল্যাটেরাল সেপ্টাম ঈর্ষান্বিত অনুভূতিকে বেশি উদ্দীপিত করে।
তবে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একে অপরের প্রতি বিশ্বাস রাখা। কোনো সমীক্ষাই চূড়ান্ত সত্য নয় এবং কোনো সমীক্ষাই সম্পর্ক বা জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই সম্পর্ক ভালো রাখতে কোনো বিষয়ে মনে খটকা তৈরি হলেও তা সরাসরি সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করুন। নিজের মতো ভেবে নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করলে আদতে কোনো লাভ হয় না। পারস্পরিক আলোচনা ও বিশ্বাসের মাধ্যমেই একটি সুস্থ ও সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব।