দীর্ঘক্ষণ ঘুমানোকে শান্তির লক্ষণ হিসেবে ধরা হলেও, সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা। যারা দৈনিক ৯ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ঘুমান, তাদের মধ্যে বিষণ্ণতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই মনকে সতেজ রাখতে এবং বিষণ্ণতা এড়াতে সৃজনশীল কাজের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ঘুমের সময় বজায় রাখা জরুরি। অতিরিক্ত ঘুম শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে অনেকেই বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করছেন। এর পাশাপাশি সংসারের নানা দায়িত্বও সামলাতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে মস্তিষ্কের উপর বাড়তি চাপ পড়ছে। এদিকে, অতিরিক্ত ঘুম মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। তাই ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে চাইলে ঘুমের সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা অত্যাবশ্যক।
বর্তমানে ডায়াবেটিস একটি ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে, যা অন্যান্য অনেক রোগের কারণ হতে পারে। কানাডার কুইবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, রাতে আট ঘণ্টার বেশি ঘুমালে শরীর রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারাতে শুরু করে। এর ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ঘুমের পরিমাণ কমানো জরুরি।
সুস্থ জীবন যাপনের জন্য হৃদযন্ত্রের সুস্থতা অপরিহার্য। তবে দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নিয়মিত ঘুমালে হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ঘুম আপনার হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
এই লকডাউন বা গৃহবন্দী জীবনে অনেকেই ওজন বৃদ্ধির সমস্যায় ভুগছেন। অতিরিক্ত ঘুম ওজন বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। দীর্ঘক্ষণ ঘুমিয়ে আপনি ওজন বাড়াতে চান, নাকি জেগে থেকে কিছু শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে ওজন কমানোর চেষ্টা করবেন – সেই সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার।
অতএব, সুস্থ থাকতে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে ঘুমের সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা অত্যাবশ্যক। দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীর এবং মনের জন্য যথেষ্ট। অতিরিক্ত ঘুমের পরিবর্তে সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে সৃজনশীল কাজ করুন, যা আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখবে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। নিজের ঘুমের অভ্যাসের দিকে নজর দিন এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।