শহুরে জীবনে সময়ের অভাবের কারণে অনেকেই একসঙ্গে বেশি খাবার রান্না করে ফ্রিজে রাখেন এবং পরে তা গরম করে খান। যদিও এই অভ্যাস সময় বাঁচানোর একটি সহজ উপায়, তবে এমন কিছু খাবার আছে যা বারবার গরম করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার গরম করার ফলে খাবারের পুষ্টিগুণ কমে যায় এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, যতটা সম্ভব টাটকা খাবার খাওয়া উচিত। একান্ত প্রয়োজনে খাবার গরম করতে হলে তা একবারের বেশি করা উচিত নয়। একাধিকবার গরম করা খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই খাবারগুলো সম্পর্কে যা পুনরায় গরম করলে বিপদ ডেকে আনতে পারে:
ভাত: আমাদের প্রধান খাদ্য ভাতে রান্নার সময় বেসিলস সিরিয়াস নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। রান্না করা ভাত যখন ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ রাখা হয়, তখন এই ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। পুনরায় ভাত গরম করলে (বিশেষত ৫ থেকে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়) এই ব্যাকটেরিয়া আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ডায়রিয়ার মতো পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।
ডিম: ডিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার হলেও, এটি দ্বিতীয়বার গরম করলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও, ডিমে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে, যা পেটের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি, ডিম পুনরায় গরম করলে এর মধ্যে থাকা নাইট্রোজেন অক্সিডাইজড হয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
মুরগির মাংস: অনেকেই সময় বাঁচাতে বেশি পরিমাণে মুরগির মাংস রান্না করে রাখেন। তবে এই অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত। মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে এবং রান্নার পর তা পুনরায় গরম করলে প্রোটিনের গঠন পরিবর্তিত হতে পারে, যা বদহজমের কারণ হয়। তাই একদিনে যতটুকু মাংস খাওয়া সম্ভব, ততটুকুই রান্না করা উচিত।
চা: একবার চা বানানোর পর তা ঠান্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করা একেবারেই উচিত নয়। চায়ে ট্যানিক অ্যাসিড থাকে এবং তৈরি করা চা ফের গরম করে পান করলে তা লিভারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
আলু: আলু একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর সবজি হলেও, এটি বারবার গরম করে খেলে এর উপকারী উপাদানগুলোর কার্যকারিতা হ্রাস পায়। বিভিন্ন কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, বারবার গরম করা আলু দিয়ে তৈরি তরকারি খেলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
অতএব, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এই খাবারগুলো বারবার গরম করা থেকে বিরত থাকুন এবং যতটা সম্ভব টাটকা খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। একান্ত প্রয়োজনে খাবার গরম করতে হলে, তা একবারের বেশি করবেন না।
