আমাদের মুখ দেখলেই বোঝা যায় শরীরের ভেতর কি অসুখ হয়েছে। আবার শরীরে যদি ভিটামিনের অভাব থাকে তাহলে কিছু কিছু উপসর্গের মাধ্যমে বোঝা যায় যে শরীরের কোন ভিটামিনের অভাব রয়েছে। সারাদিনে আমাদের যতটা পরিশ্রম হয় অনেক সময় আমাদের পরিশ্রম অনুযায়ী খাবার ঠিকমতো গ্রহণ করা হয়না। এই খাবার ঠিকমতো খাওয়া না হলে আমাদের শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি এই অনিয়মের ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে 100 কোটি মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব রয়েছে। চিকিৎসকদের মত অনুযায়ী ভিটামিন ডি এর অভাব হলে আমাদের মুখ দেখেই নাকি বোঝা যায়।
কিছু ছোট ছোট উপসর্গের মাধ্যমে আপনার শরীরে কোন ভিটামিনের অভাব রয়েছে তা এই লেখা টি পড়লেই বোঝা যাবে। আপনি মিলিয়ে নিন যে আপনার শরীরে কোন ভিটামিনের অভাব বর্তমান।
১) অনেক সময় অল্প বয়সে চুল পেকে যায় বা চুল পড়ে যায়। অনেকেই এটিকে কোন কেমিক্যাল এর ব্যবহারের কুফল বলে মনে করেন। কিন্তু বাস্তবে এমনটা নয় এটি ভিটামিন বি৭ (বায়োটিন), ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর অভাবজনিত কারণের জন্য হচ্ছে। এই ভিটামিনের অভাব পূরণ করবার জন্য মাছ, ডিম, মাশরুম, ফুলকপি, বাদাম, তিলের বীজ ও কলা পর্যাপ্ত পরিমাণে খান।
২) কম বয়সী অনেকেই এখন হাতে ও পায়ে ঝি ঝি ধরা, পায়ের পাতা, তালু এবং পায়ের পেছনের অংশে ব্যথা অনুভব করেন। আমরা এই রকম সমস্যা হলে মনে করি একটানা বসে থাকা বার্নার্সের চাপ পড়ার জন্য এই উপসর্গগুলো দেখা দিচ্ছে । কিন্তু এই সমস্ত উপসর্গের মূলে রয়েছে ওয়াটার স্যলুবল বি ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব জনিত কারণ। এই সমস্যাগুলো দূর করতে গেলে আপনাকে সবুজ শাক, কাঠবাদাম, তাল, কমলা, কলা, চিনাবাদাম, ডাবের জল, কিশমিশ, কাজু বাদাম প্রভৃতি খেতে হবে।
৩) অনেক সময় আমাদের ঠোঁট বা পায়ের গোড়ালি ফাটলে দেখা যায়। আমরা মনে করি শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য এই রকম ঠোট ও পায়ের গোড়ালির চামড়া ফেটে যায়। কিন্তু এর মূলে রয়েছে ভিটামিন বি৩, বি২ ও বি১২ এবং আয়রন, জিংক ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনকারী গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনের অভাব। এই সমস্ত ভিটামিনের অভাব পূরণের জন্য আপনাকে অবশ্যই ডিম, টমেটো, চিনাবাদাম, ডাল, দই, পনির, ঘি এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
৪) অনেক সময় আমরা দিকের নানা অংশ অবশ হয়ে যেতে অনুভব করি। তখন আমরা মনে করি পরিশ্রম না করা নারীর উপর চাপ পড়ার জন্য সমস্যা গুলি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু বি৯, বি৬ এবং বি১২ এর ভাত খেলে শরীরে এই সমস্যাগুলো পরিলক্ষিত হয়। এই সমস্যাগুলি থেকে দূরে থাকতে গেলে সামুদ্রিক মাছ, লাল চালের ভাত, বাদাম, ডিম, মুরগির মাংস, কলা, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং সবুজ শাক সবজি খান।
৫) অনেক সময় আমাদের হাঁটুর পিছনের পেশিতে টান ধরে। এই রকম সমস্যার পেছনে রয়েছে ক্যালসিয়াম ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের ঘাটতি।
৬) অনেক সময় আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে সাদাটে বা লালচে ধরনের ফোসকা উঠতে দেখা যায়। এই ধরনের সমস্যা গুলি ভিটামিন এ ও ডি এবং এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাবে হয়ে থাকে। একটানা বেশিদিন এসি ঘরে না থেকে সূর্যের আলোকে গায়ে লাগান। প্রচুর পরিমাণে মাছ, শাকসবজি ও ডিম খান তাহলে এই ফোসকাগুলি আর শরীরে হবে না।
৭) চোখের তলায় অনেক সময় কালি বা চোখের নিচের অংশে ফোলা ভাব দেখা যায়। এগুলি ভিটামিনের অভাবে হয়ে থাকে।
এই সমস্যাগুলি দূর করতে গেলে শাকসবজি ডিম দুধ প্রভৃতি খাদ্য তালিকায় রাখুন।