শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিন ও মিনারেলের ভূমিকা অপরিসীম। সঠিক খাদ্যাভ্যাস থেকেই শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যার অভাবে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, ভিটামিন সি-র ঘাটতি হলে থাইরয়েডের সমস্যা, রক্তশূন্যতা ও দাঁতের রোগ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
১. থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
থাইরয়েডের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। ভিটামিন সি-র অভাবে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা হাইপারথাইরয়েডিজম-এর কারণ হতে পারে। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
অকারণে ওজন কমে যাওয়া
বুক ধড়ফড় করা
খাবারে অরুচি
অতিরিক্ত ঘাম ও আতঙ্ক
চিকিৎসকরা জানান, ভিটামিন সি থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি রাখা জরুরি।
২. রক্তশূন্যতার ঝুঁকি
ভিটামিন সি আয়রন শোষণে সহায়তা করে, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
দুর্বলতা ও ক্লান্তি
ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
শ্বাসকষ্ট
লেবু, আমলকী, পেয়ারা, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি খাবার আয়রন শোষণ বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. দাঁত ও মাড়ির ক্ষয়
ভিটামিন সি দাঁতের মজবুত গঠন ও মাড়ি সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হতে পারে, যার লক্ষণ হলো—
মাড়ি থেকে রক্ত পড়া
দাঁতের গোড়া দুর্বল হয়ে যাওয়া
মুখে ঘা
কমলা, স্ট্রবেরি, ব্রকলি ইত্যাদি নিয়মিত খেলে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
কীভাবে পূরণ করবেন ভিটামিন সি-র ঘাটতি?
প্রতিদিন আমলকী, লেবু, পেয়ারা, কিউই, টমেটো খান।
শাকসবজি যেমন ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, পালং শাক রাখুন খাদ্যতালিকায়।
ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ভিটামিন সি শোষণে বাধা দেয়।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ৬৫-৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট না নিয়ে প্রাকৃতিক উৎস থেকে ভিটামিন সি গ্রহণই উত্তম।