সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা খুললেই এখন বিভিন্ন জিম কোম্পানির ঝলমলে বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের রিলসে ফিটনেস-ফ্রিকদের সুস্থ থাকার মন্ত্র যেন ভেসে বেড়ায়। এমনকি, শহরের প্রতিটি পাড়াতেই এখন একাধিক আধুনিক জিমখানা বিদ্যমান। এই ফিটনেস সচেতনতার বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই বিশেষজ্ঞরা কিন্তু ভারতের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে এক тревожный ঘণ্টা বাজিয়েছেন। তাদের মতে, দেশ এখন রেড অ্যালার্টে।
দেশি-বিদেশি স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাগুলির দাবি, গত কয়েক বছরে ভারতে যেভাবে ওবেসিটি বা স্থূলতা নিয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, তা সত্যিই উদ্বেগজনক।
Ipmose Health Service-এর ২০২৪ সালের একটি রিপোর্ট এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরেছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে ভীত মানুষের সংখ্যা ৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে, দেশের ২৮ শতাংশ মানুষ কিন্তু এখন ওবেসিটি বা স্থূলতা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
শুধু তাই নয়, Ipmose Health Service গত বছর একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা চালায়। ৩১টি দেশের প্রায় ২৩ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে এই সমীক্ষায় ভারতের ২,২০০ জন নাগরিকও অংশ নিয়েছিলেন। সেই সমীক্ষার তথ্য আরও চমকপ্রদ। সেখানে দেখা গেছে, ১৪ শতাংশ ভারতীয় ওবেসিটি নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন, যেখানে ক্যানসারের ভয় রয়েছে মাত্র ১২ শতাংশের মধ্যে।
এই পরিসংখ্যান স্পষ্টতই ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভারতে ফিটনেস নিয়ে এত প্রচার এবং জিমে যাওয়ার প্রবণতা বাড়া সত্ত্বেও স্থূলতা একটি বড় স্বাস্থ্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাবই এই পরিস্থিতির মূল কারণ। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য অসংক্রামক রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তাই, শুধুমাত্র জিমে যাওয়াই যথেষ্ট নয়, একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুষম জীবনযাপন জরুরি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।