কাজের ফাঁকে ঘন ঘন চা পানের অভ্যাস অনেকেরই। বন্ধুদের আড্ডা থেকে শুরু করে কাজের টেবিলে কিংবা অলস দুপুরে – চায়ের কাপ যেন এক অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। চায়ের একাধিক স্বাস্থ্যগুণও রয়েছে, তা আমরা সকলেই জানি। তবে সম্প্রতি একটি নতুন সমীক্ষা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এনেছে। গবেষণা বলছে, নিয়মিত চা পান করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা সম্ভব।
‘ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অব ডায়াবেটিস’-এর সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি অনুসারে, যারা প্রতিদিন অন্তত চার কাপ চা পান করেন, তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১৭ শতাংশ কমে যায়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, চায়ে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক উপাদানগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দিনের বিভিন্ন সময়ে অল্প পরিমাণে চা পান করার অভ্যাস ডায়াবেটিসের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে।
এই সমীক্ষার জন্য ৫০ থেকে ৬৫ বছর বয়সী প্রায় ৩০০ জন ব্যক্তির জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তি ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছিলেন।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা নেই, তাদের মধ্যে অনেকেই দিনের বিভিন্ন সময়ে নিয়মিত চা পান করেন। অন্যদিকে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চা পানের তেমন প্রবণতা দেখা যায়নি। এমনকি যারা চা পান করেন, তাদের অধিকাংশই তুলনামূলকভাবে কম পরিমাণে চা গ্রহণ করেন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধু ডায়াবেটিস নয়, চায়ে বিদ্যমান ফ্ল্যাভোনয়েডস, ফাইটোকেমিক্যাল এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সহায়ক। চা আমাদের হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, ঋতু পরিবর্তনের সময়কার সাধারণ সমস্যা যেমন গলাব্যথা, জ্বর, সর্দি-কাশির উপশমেও চায়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন।
সুতরাং, যদি আপনিও নিয়মিত চা পান করার অভ্যাস রাখেন, তবে তা কেবল আপনার মনকে সতেজ রাখবে না, বরং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করবে। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, পরিমিত পরিমাণে এবং চিনি ছাড়া চা পান করাই স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী।