গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহেই কি লক্ষণ দেখা যায়? পিরিয়ড মিস ছাড়াও বুঝুন যেভাবে

গর্ভধারণের সময় একজন নারীর শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন আসে এবং নানা লক্ষণ প্রকাশ পায়। সাধারণভাবে, মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়াকেই গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। তবে অনেক নারী পিরিয়ড মিস হওয়ার আগেই, এমনকি গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই কিছু লক্ষণ অনুভব করতে পারেন। এমনও দেখা যায়, পিরিয়ড নিয়মিত থাকা সত্ত্বেও কোনো নারী গর্ভধারণ করেছেন।

পিরিয়ড মিস হওয়া ছাড়াও বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যা গর্ভধারণের ইঙ্গিত দিতে পারে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক সেই লক্ষণগুলো সম্পর্কে:

মর্নিং সিকনেস: গর্ভধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো মর্নিং সিকনেস। ঘুম থেকে ওঠার পর দুর্বল ও ক্লান্তি লাগা এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। তবে শুধু সকালেই নয়, দিনের বা রাতের যেকোনো সময় এই অনুভূতি হতে পারে। গর্ভধারণের পর থেকেই সাধারণত এই সমস্যা শুরু হয়।

বমি: গর্ভধারণের ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পর বমি হওয়া শুরু হতে পারে। এই সময় শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে সকালে ঘুম থেকে উঠেই বমি বমি ভাব লাগে। এমনকি দিনের বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার বমি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহেই প্রায় ৮০ শতাংশ নারী বমির সমস্যায় ভোগেন।

স্তনের পরিবর্তন: গর্ভধারণের পর প্রায় সব নারীই স্তনে ব্যথা, ফোলাভাব বা ভারী অনুভব করেন। কারো কারো ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই স্তনে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ: গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ বা স্রাবের মতো লক্ষণ দেখা যায়। গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে এই সমস্যা বেশি হতে পারে। হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই এই ডিসচার্জ হয়ে থাকে।

শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি: এটিও গর্ভধারণের একটি লক্ষণ। নানা কারণে এই সময় শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। গর্ভধারণকালে প্রোজেস্টেরোনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এমনটা ঘটে।

ক্লান্তি ও দুর্বলতা: অনেক নারী গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করেন। শারীরিকভাবে তেমন পরিশ্রম না করলেও এই সময় ক্লান্তি লাগতে পারে।

ব্লিডিং: পিরিয়ডের তারিখ ছাড়াও যদি হঠাৎ করে ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং হয়, তবে তা গর্ভধারণের লক্ষণ হতে পারে। ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং, হালকা স্পটিং এবং তলপেটে ব্যথা গর্ভধারণের ইঙ্গিত দেয়।

মুড সুইং: গর্ভধারণকালে মুড সুইং বা মানসিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন এবং মাথা ঘোরা খুবই সাধারণ লক্ষণ। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে গর্ভবতী নারীরা হঠাৎ কাঁদতে পারেন, রেগে যেতে পারেন, আনন্দিত হতে পারেন অথবা অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারেন।

মাথাব্যথা: গর্ভবতী হওয়ার পরপরই অনেক নারী মাথাব্যথা অনুভব করেন। গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে রক্ত সঞ্চালন এবং হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে এমনটা হয়ে থাকে।

টয়লেটের প্রবণতা বৃদ্ধি: গর্ভধারণের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ পাওয়া। ওভুলেশন প্রক্রিয়ার পর গর্ভধারণ সম্পন্ন হলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার প্রস্রাব হতে পারে। গর্ভাবস্থায় শরীরের রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই সময় কিডনি অতিরিক্ত তরল নিঃসরণ করে, যা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

উপরের লক্ষণগুলো দেখা গেলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy