কোলেস্টেরল বাড়লে বিপদ! পায়ে দেখা দিতে পারে মারাত্মক ব্যথা

রক্তে উপস্থিত মোম জাতীয় পদার্থ কোলেস্টেরল শরীরের কোষ গঠনে জরুরি ভূমিকা রাখে। তবে প্রয়োজনীয় হলেও এর মাত্রা বাড়লে তা ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপদ। কোলেস্টেরলের সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এতদিন কোলেস্টেরলের একাধিক উপসর্গের কথা জানা গেলেও, নতুন এক তথ্য সামনে এনেছেন বিশেষজ্ঞরা – কোলেস্টেরলের কারণে হতে পারে পায়ে অসহ্য ব্যথাও।

সাধারণত দুই ধরনের কোলেস্টেরল নিয়ে আলোচনা করা হয় – এলডিএল (লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন) এবং এইচডিএল (হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন)। এর মধ্যে এলডিএল-কে খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে গণ্য করা হয়। এই এলডিএল রক্তনালীর অভ্যন্তরে জমা হয়ে প্লাক তৈরি করে, যা রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, এইচডিএল হার্টের জন্য উপকারী এবং এর উচ্চ মাত্রা সমস্যার ঝুঁকি কমায়। চিকিৎসকরা তাই এলডিএল কমিয়ে এইচডিএল বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজের মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। এই রোগ থেকে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক পরিণতিও ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত। তবে অনেক সময় শরীরে এই রোগ বাসা বাঁধলেও তেমন কোনও সুস্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায় না। ফলে সমস্যা আরও গভীরে চলে যায়। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকা ছাড়া অন্য কোনও উপায় দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।

কোলেস্টেরলের কিছু পরিচিত লক্ষণ:

নখ ভেঙে যাওয়া ও নখের ভিতরে দাগ দেখা দেওয়া।
পায়ের ত্বক অস্বাভাবিক চকচক করা।
পায়ে হঠাৎ আলসার বা ঘা সৃষ্টি হওয়া।
ত্বকের রঙের পরিবর্তন।
পুরুষদের ক্ষেত্রে ইরেকটাইল ডিসফাংশন।
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে চুল পড়াও বৃদ্ধি পেতে পারে। রক্তনালীতে প্লাক জমার কারণে চুলের গোড়ায় পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছাতে পারে না।
পায়ের সমস্যায় কোলেস্টেরলের প্রভাব:

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যাধিক বেড়ে গেলে পায়ে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে পায়ের রক্তনালীতে কোলেস্টেরল জমা হতে শুরু করে। ফলে পায়ে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এই কারণে পায়ে বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তি দেখা দেয়। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি সামান্য হাঁটলেই তীব্র ব্য অনুভব করেন। অনেকের পা অবশ হয়ে যায়, এমনকি চিমটি কাটলেও তেমন অনুভূতি পাওয়া যায় না। এছাড়াও, পায়ের পেশির উপরও এর খারাপ প্রভাব পড়ে। পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে পায়ের পেশি দুর্বল হয়ে ক্রমশ কার্যকারিতা হারাতে থাকে।

করণীয়:

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত। এর পাশাপাশি নিম্নলিখিত নিয়মগুলি মেনে চলা জরুরি:

ধূমপান সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করুন।
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন।
বাইরের তেল, ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
সচেতনতাই পারে কোলেস্টেরলের মারাত্মক ঝুঁকি থেকে আপনাকে রক্ষা করতে। তাই কোনও উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং একটি সুস্থ জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy