ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের শরীরে নানা রকম প্রভাব পড়ে। ত্বক থেকে শুরু করে চুল পর্যন্ত—সবকিছুতেই দেখা দেয় পরিবর্তন। বিশেষ করে মাথার ত্বকে এই সময় নানা সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কারও হয় খুশকি, কারও চুল হয়ে পড়ে অতিরিক্ত তেলতেলে বা রুক্ষ, আবার অনেকের মাথার তালু চুলকাতে শুরু করে। তবে ত্বকের সংক্রমণ হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সোরিয়াসিস, ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা অ্যালার্জির মতো সমস্যা ঘরোয়া উপায়ে সারানো কঠিন। তবে ঋতু বদলের কারণে হওয়া সাধারণ সমস্যাগুলির জন্য কিছু ঘরোয়া সমাধান বেশ কার্যকর হতে পারে।

অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার: অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটারি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। মাথার ত্বকের শুষ্কতা যদি চুলকানির কারণ হয়, তাহলে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ও জলের মিশ্রণ নিয়মিত ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করাও জরুরি। সপ্তাহে দু’দিন শ্যাম্পুর পর এক কাপ জলে এক টেবিলচামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে মাথার তালুতে ভালোভাবে লাগান। কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।

টি ট্রি অয়েল: টি ট্রি অয়েল অ্যান্টি ফাঙ্গাল, অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক গুণসমৃদ্ধ। এটি প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। তবে সরাসরি টি ট্রি অয়েল মাথায় লাগানো উচিত নয়। আপনার পছন্দের হেয়ার মাস্কে ১০-১২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পুর সঙ্গেও মেশানো যায়। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

নারকেল বা অলিভ অয়েল: কোল্ড প্রেসড নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মাথার তালুর শুষ্কতা দূর করতে খুবই উপযোগী। শুষ্কতার কারণে অনেক সময় মাথার ত্বক চুলকায়। সেক্ষেত্রে সপ্তাহে অন্তত দু’দিন নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল হালকা গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। তেল মাখার ঘণ্টাখানেক পর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।

অ্যালো ভেরা জেল: অ্যালো ভেরার পাতার ভেতরের নরম শাঁসটুকু বের করে নিন। আঙুল দিয়ে মাথার তালুতে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা জলে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। অ্যালো ভেরা মাথার ত্বককে ঠান্ডা রাখে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।

লেবুর রস: সরাসরি লেবুর রস স্ক্যাল্পে না লাগিয়ে আপনার ব্যবহার করা তেল, হেয়ার মাস্ক বা প্যাকে মিশিয়ে সপ্তাহে দু’-তিনবার মাথায় লাগাতে পারেন। তবে এর পর অবশ্যই শ্যাম্পু করে নেবেন। লেবুর অ্যাসিডিক উপাদান খুশকি কমাতে সাহায্য করে।

মাথার ত্বকের সমস্যা এড়াতে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলাও জরুরি। নিয়মিত নিজের বালিশের ওয়াড়, চিরুনি ও তোয়ালে পরিষ্কার রাখুন। সপ্তাহে দু-তিন দিনের বেশি শ্যাম্পু করার প্রয়োজন নেই। নিজের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালশিয়াম রাখুন। বারবার ব্লো ড্রাই বা হিট স্টাইলিং করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে মাথার ত্বকের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। গরম জলে স্নান না করাই ভালো। এছাড়াও, নতুন কোনও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্ট বা ডাই ব্যবহার করার আগে অ্যালার্জি পরীক্ষা করে নিন।