ঘুমের অভাব থেকে শুরু করে দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপ বা ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস কিংবা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন – ডার্ক সার্কেল বা চোখের নিচের কালো দাগের কারণ হতে পারে অনেক কিছুই। কারণ যাই হোক না কেন, মুখের সৌন্দর্য্যে যেন এক কালো মেঘের মতো এই ডার্ক সার্কেল। তবে যত দ্রুত এই কালো দাগ তৈরি হয়, সঠিক পরিচর্যায় এটি খুব তাড়াতাড়ি ঠিকও হয়ে যায়। সামান্য কিছু অভ্যাসের পরিবর্তনেই অনেকটাই দাগমুক্ত হতে পারে চোখের নিচের ত্বক।
তবে এই পরিবর্তনগুলো করার আগে ডার্ক সার্কেল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে রাখা ভালো। জনপ্রিয় ডার্মেটোলজিস্ট ডাঃ মাধুরী আগরওয়াল সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন। সেখানে ডার্ক সার্কেল নিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেছেন।
ডার্ক সার্কেল বিষয়টি সহজভাবে বোঝাতে গিয়ে ডাঃ মাধুরী আগরওয়াল জামাকাপড় ও চোখের নিচের ত্বকের তুলনা টেনেছেন। তিনি বুঝিয়েছেন, চোখের এই অংশটা অনেকটা সিল্কের মতো, মুখের ত্বক সুতির মতো এবং শরীরের ত্বক ডেনিমের মতো। যেভাবে এই তিন রকমের পোশাক আপনি একই নিয়মে ধোবেন না, ঠিক তেমনই এই তিন ধরনের ত্বকের পরিচর্যাও হবে আলাদা আলাদা।
তিনি আরও জানিয়েছেন, অনেক সময় বিভিন্ন অ্যালার্জির কারণেও ডার্ক সার্কেল হতে পারে। এই ধরনের ডার্ক সার্কেলকে অ্যালার্জি শাইনার বলা হয়। এবং এই ডার্ক সার্কেল শুধু অনিয়মিত জীবনযাপনকেই বোঝায় না, অনেক সময় শরীরের বড় কোনো বিপদের সংকেতও দিতে পারে, যেমন কিডনির সমস্যা, অ্যাড্রেনাল ভারসাম্যহীনতা অথবা অতিরিক্ত স্ট্রেস বা টেনশন।
ধূমপান বা মদ্যপান করলেও ডার্ক সার্কেলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ধূমপান ত্বকের ক্ষতি করে এবং কোলাজেনের উৎপাদন কমিয়ে ত্বককে অকালে বুড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে, মদ্যপান করলে অনেকের মধ্যে ঘুমের সমস্যা দেখা যায়, যার কারণেও ডার্ক সার্কেল সৃষ্টি হতে পারে।
এগুলো ছাড়াও ঘন ঘন চোখ ডলা ঠিক নয় বলেও জানিয়েছেন ডাঃ মাধুরী আগরওয়াল। কারণ চোখের আশেপাশের অংশ অত্যন্ত সংবেদনশীল। একটানা জোরে জোরে চোখ ডললে চোখের নিচে থাকা সূক্ষ্ম রক্তনালীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে হেমোসিডেরিন নামক একটি সমস্যা হতে পারে, যার কারণে পিগমেন্টেশন হয় এবং ডার্ক সার্কেল দেখা দিতে পারে।
সুতরাং, ডার্ক সার্কেলকে কেবল ক্লান্তি বা ঘুমের অভাবের লক্ষণ হিসেবে না দেখে, এর পেছনের অন্যান্য কারণগুলোও বিবেচনা করা উচিত। যদি ডার্ক সার্কেল দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার সঙ্গে দেখা দেয়, তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।