“দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ সতীসাধ্বী রমণী” – এই ছোট্ট উক্তিটির গভীরতা অপরিসীম। একজন পুরুষের জীবনে পূর্ণতা আসে নারীর সান্নিধ্যে। সুখে-দুঃখে স্ত্রী হন তার জীবনসঙ্গিনী। দাম্পত্য জীবনে যদি একজন নারী পবিত্র চরিত্রের অধিকারী হন, তবে সেই জীবন স্বর্গতুল্য হয়ে ওঠে। কঠিন পরিস্থিতিতেও শান্তির ধারা প্রবাহিত হয়, যা নারী-পুরুষের বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমেই শুরু হয়।
বিবাহিত জীবনে লক্ষ্য করুন, যদি আপনার স্ত্রী নিচের চোদ্দটি কাজ করেন, তবে ধরে নিন তিনি এই যুগের শ্রেষ্ঠ স্ত্রী এবং আপনি এক সুখময় দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করছেন –
১. আপনার আলোচনায় আগ্রহ: যদি আপনার অনুপস্থিতিতে তিনি আপনার কথা আলোচনা করেন, আপনার সম্পর্কে শুনতে আগ্রহ দেখান অথবা আপনার জীবনের গল্প শুনতে ভালোবাসেন এবং আপনি যাদের ভালোবাসেন তিনিও যদি তাদের ভালোবাসেন, তবে নিঃসন্দেহে আপনি একজন স্বামী সোহাগিনী স্ত্রী পেয়েছেন।
২. মতের অমতে ধৈর্য: আপনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করলে বা কোনো বিষয়ে আপনার সঙ্গে একমত না হলেও, যদি তিনি রাগ না করেন বা অভিমান না করেন, তবে আপনি একজন ভাগ্যবান স্বামী। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে উভয়ের আলোচনা ও গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
৩. সুখ-দুঃখের সাথী: আপনার হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখে যদি তিনি সমব্যথী ও বন্ধুর মতো পাশে থাকেন, তবে বুঝবেন তিনি একজন স্বামীপরায়ণা স্ত্রী।
৪. কথায় আগ্রহ: যদি দেখেন তিনি নিত্যনতুন বিষয় নিয়ে আপনার সাথে কথা বলেন এবং বিষয় খুঁজে না পেলেও কোনো ছুঁতোয় আপনার সাথে কথা বলার উপায় খোঁজেন, তবে তিনি একজন স্বামী-অন্তপ্রাণ স্ত্রী।
৫. পরামর্শে গুরুত্ব: যখনই কোনো নতুন কাজ শুরু করেন বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আপনার সাথে পরামর্শ করেন, তখন আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে আপনি একজন পতিব্রতা স্ত্রী পেয়েছেন।
৬. সামান্য উপহারে খুশি: যত কম দামের উপহারই হোক না কেন, আপনি দিলে যদি তিনি দু’হাত ভরে সানন্দে গ্রহণ করেন এবং খুশি হন, তবে আপনি শুধু আদর্শ স্ত্রী নন, একজন বুদ্ধিমতী স্ত্রীও পেয়েছেন।
৭. কাজে সাহায্য: যদি তিনি সর্বদা আপনাকে ভারমুক্ত রাখতে সচেষ্ট থাকেন এবং আপনার ছোটখাটো কাজগুলিতেও এগিয়ে এসে সাহায্য করেন, তবে ধরে নিতে পারেন আপনার জীবন সুখেই কাটবে।
৮. আপনার চিন্তায় উদ্বিগ্ন: আপনার অনুপস্থিতি যদি তাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে এবং বারবার ফোন বা মেসেজ করে আপনার খোঁজখবর নেন, তবে ধরে নিন আপনি একজন সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষ পেয়েছেন।
৯. আপনার পছন্দের প্রতি যত্ন: আপনি যা পছন্দ করেন তা যদি তিনি আগ্রহের সাথে করেন এবং যা অপছন্দ করেন তা সযত্নে পরিহার করে চলেন, তবে আপনি নিশ্চিত থাকুন যে আপনি একটি সুখী জীবন কাটাচ্ছেন।
১০. দোষ-ত্রুটিতে ধৈর্য: আপনার স্বভাবের বিশেষ দোষ-ত্রুটি বা খুঁত যদি তাকে বিরক্ত না করে বা রাগিয়ে না তোলে, তবে আপনি সর্বকালের সেরা একজন বন্ধু পেয়েছেন।
১১. আপনার জন্য কষ্ট স্বীকার: যদি তিনি আপনার জন্য যেকোনো ধরনের কষ্ট স্বীকার করতে সর্বদা প্রস্তুত থাকেন, তবে একটি সুখময় জীবন আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
১২. আপনার চিন্তায় আগ্রহ: যদি তিনি আপনার চিন্তার জগতে আগ্রহের সাথে অংশগ্রহণ করেন, আপনার পছন্দের বিষয়ে আগ্রহী হন এবং আপনার কল্পনার সাথে একাত্ম হন, তবে আপনার চেয়ে সুখী আর কেউ নেই।
১৩. ছোট কাজেও দ্বিধাহীন: যদি তিনি আপনার জন্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কাজও দ্বিধা বা সংকোচ ছাড়াই করতে পারেন, তবে আপনার উচিত আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানানো।
১৪. আধ্যাত্মিক পথে সহায়ক: যদি তিনি আপনাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে, ইবাদত-বন্দেগীতে এবং পাপমুক্ত জীবন যাপনে সহযোগিতা ও উৎসাহিত করেন, তবে ধরে নিন আপনি এমন কিছু পেয়েছেন যা আপনাকে দুনিয়াতেও জান্নাতি সুখের সন্ধান দেবে এবং আখেরাতেও জান্নাত লাভের নিশ্চয়তা দেবে।
দাম্পত্য জীবন সুখের হোক, প্রতিটি স্বামী এমন গুণবতী স্ত্রী লাভ করুন – এটাই কামনা।