লিভারকে সুস্থ রাখতে ত্যাগ করুন এই ৭টি বদভ্যাস

লিভার মানব দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীরের জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু লিভারের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হলে, এই টক্সিনগুলো শরীরেই জমা হতে শুরু করে। যার ফলস্বরূপ শরীরে একের পর এক স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু ভুল অভ্যাসই লিভারের ক্ষতির প্রধান কারণ। এই অভ্যাসগুলো লিভারের স্বাভাবিক কাজকর্মকে ব্যাহত করে। তাই সুস্থ জীবনযাপন করতে হলে লিভারের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। লিভারকে সুরক্ষিত রাখতে যে ৭টি বদভ্যাস ত্যাগ করা আবশ্যক, তা নিচে উল্লেখ করা হলো:

অ্যালকোহল পান: অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে লিভারের টক্সিন অপসারণের ক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। এর পরিণতিতে লিভারে প্রদাহ এবং ফ্যাটি লিভারের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণ: প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওষুধ সেবন লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এমনকি এটি লিভার ফেইলিওরের দিকেও ধাবিত করতে পারে। বিশেষত অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যথানাশক ওষুধ খেলে লিভারের কর্মক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

ধূমপান: অ্যালকোহলের মতোই ধূমপানও লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপানের ফলে লিভারে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ে এবং এর কার্যকারিতা ব্যাহত হয়।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিভিন্ন অ্যাডিটিভ ও কৃত্রিম মিষ্টি থাকে। অতিরিক্ত তেলযুক্ত ও মসলাদার খাবার, ফাস্ট ফুড এবং ফ্যাটি ফুড লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবারের পরিবর্তে খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফল এবং শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এই খাবারগুলো বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস, যা লিভারকে সুস্থ রাখতে সহায়ক। এছাড়াও, অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা খাবার খাওয়ার অভ্যাসও লিভারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব: পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব লিভারে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে, যা লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই লিভারের সঠিক যত্ন নিতে প্রতিদিন অন্ততপক্ষে টানা ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা উচিত।

সকালে খালি পেটে থাকা: ঘুম থেকে ওঠার পর দীর্ঘ সময় ধরে খালি পেটে থাকার অভ্যাস লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম চলতে থাকলে লিভারের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।

অতিরিক্ত নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ: অতিরিক্ত মাত্রায় নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট এবং নির্দিষ্ট ভেষজ গ্রহণ করাও লিভারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন এ গ্রহণ লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।

দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া এবং ওঠা: দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া এবং দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা – উভয় অভ্যাসই লিভারের জন্য ক্ষতিকর। এই অভ্যাসের ফলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়, যা শরীরের অন্যান্য অঙ্গের পাশাপাশি লিভারের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এই বদভ্যাসগুলো ত্যাগ করে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে লিভারকে সুস্থ রাখা সম্ভব এবং সামগ্রিকভাবে শরীরও ভালো থাকবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy