সুস্থ থাকতে হাঁটার বিকল্প নেই। দিনের অন্য কোনো শরীরচর্চার সুযোগ না থাকলেও, চিকিৎসকেরা নিয়মিত হাঁটার পরামর্শ দেন। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস অত্যন্ত কার্যকরী। অনেকেই সুস্থ ও সবল জীবন যাপনের জন্য প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। তবে যেমন তেমনভাবে হাঁটলে চলবে না, প্রকৃত উপকার পেতে মর্নিং ওয়াকে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
আসুন জেনে নেওয়া যাক, সকালে হাঁটার সময় किन ৫টি নিয়ম অবশ্যই মানা উচিত:
১. সময় ধরে হাঁটুন: অনেকেই মনে করেন সকালে ১০-১৫ মিনিট হাঁটলেই যথেষ্ট। কিন্তু আসলে এই অল্প সময় হাঁটার তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উপকারিতা নেই। শরীরকে ভালোভাবে সক্রিয় করতে এবং রোগের ঝুঁকি কমাতে হলে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে। সম্ভব হলে এর চেয়ে বেশি সময় হাঁটতে পারেন, তবে ৩০ মিনিটের কম নয়।
২. ওয়ার্মআপ মাস্ট: দ্রুত হাঁটা বা ব্রিস্ক ওয়াক শুরু করার আগে অবশ্যই ওয়ার্মআপ করা প্রয়োজন। রাতের দীর্ঘ বিশ্রামের পর শরীরের পেশিগুলো কিছুটা আড়ষ্ট হয়ে থাকে। তাই হাঁটার আগে ৪-৫ মিনিটের হালকা ওয়ার্মআপ পেশির সঞ্চালন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তা না হলে হাঁটার মাঝপথে পায়ে বা পিঠে ক্র্যাম্প হতে পারে এবং আঘাত লাগার ঝুঁকিও বাড়ে।
৩. হাইড্রেশন বজায় রাখুন: হাঁটার সময় জল তেষ্টা পাওয়া স্বাভাবিক। তাই হাঁটতে যাওয়ার আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। হাঁটার সময় নিজের সাথে একটি জলের বোতল রাখুন এবং তৃষ্ণা অনুভব করলে অবশ্যই জল পান করুন। শরীরে জলের অভাব হলে ক্লান্তি লাগতে পারে এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
৪. সঠিক জুতো ও পোশাক: হাঁটার জন্য সঠিক জুতো নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভুল জুতো পরলে পায়ের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে এবং পায়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। খুব দামি জুতোর প্রয়োজন না হলেও, অন্তত একটি ভালো স্পোর্টস শু পরা উচিত যা আপনার পায়ের জন্য আরামদায়ক। এছাড়াও, হাঁটার সময় সুতির এবং ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরিধান করুন। এতে ঘাম হলে অস্বস্তি কম হবে এবং শরীর সহজে বাতাস চলাচল করতে পারবে।
৫. খালি পেটে নয়: সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে হাঁটতে গেলে অনেকেই দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার কারণে গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও হতে পারে। তাই হাঁটার আগে অল্প পরিমাণে ড্রাই ফ্রুটস (যেমন বাদাম, কিশমিশ) খেতে পারেন যা আপনাকে শক্তি জোগাবে। এছাড়াও, এক কাপ ব্ল্যাক কফি পান করলেও হাঁটার জন্য প্রয়োজনীয় এনার্জি পাওয়া যায়।
এই সহজ নিয়মগুলো মেনে চললে আপনার মর্নিং ওয়াক কেবল একটি অভ্যাসই থাকবে না, বরং এটি আপনার সুস্থ ও সবল জীবনের চাবিকাঠি হয়ে উঠবে। তাই আর দেরি না করে, আজ থেকেই এই নিয়মগুলো অনুসরণ করা শুরু করুন এবং উপভোগ করুন এক প্রাণবন্ত জীবন।