গরমকাল মানেই অস্বস্তি। আর এই সময় ঘামাচি ও চুলকানির মতো ত্বকের সমস্যা যেন পিছু ছাড়ে না অনেকেরই। তীব্র গরমে অতিরিক্ত ঘাম জমা হওয়ার কারণে এই ধরনের সমস্যাগুলি দেখা যায়। তবে চিন্তা নেই! হাতের কাছে থাকা কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়েই আপনি এই জ্বালা-যন্ত্রণা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন। দেখে নিন সেই ৯টি কার্যকরী টিপস:
১. অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য এক দারুণ শীতলকারী উপাদান। ঘামাচি বা চুলকানির সমস্যা হলে রাতে ঘুমোনোর আগে ত্বকের আক্রান্ত স্থানে তাজা অ্যালোভেরা জেল লাগান। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করবে এবং আরাম দেবে।
২. নারকেল তেল: শুষ্ক ত্বকে চুলকানির প্রবণতা বাড়ে। নারকেল তেলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই এটি ঘামাচি ও চুলকানি উভয় সমস্যা সমাধানে সহায়ক। এই তেল ত্বক থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
৩. সঠিক পোশাক নির্বাচন: ঘাম জমে থাকার কারণেই মূলত ত্বকের এই সমস্যাগুলি হয়। সুতির পোশাক, রেয়ন বা শিফনের মতো হালকা কাপড় সহজেই ঘাম শোষণ করতে পারে। তাই গরমকালে এই ধরনের পোশাক পরিধান করুন। এতে ঘামাচির সমস্যা অনেকটাই কম হবে।
৪. ঠান্ডা জলে স্নান: গরমকালে দিনের শুরুতে বা বাড়ি ফিরে অনেকেই স্নান করেন। এই অভ্যাসের সাথে সামান্য পরিবর্তন আনুন। চেষ্টা করুন একটু ঠান্ডা জলে স্নান করতে। চাইলে সামান্য বরফও মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি ঘামাচির জ্বালা কমাতে খুব দ্রুত কাজ করে।
৫. মেডিকেটেড ট্যালকম পাউডার: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্নানের পর মেডিকেটেড ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। এটি ঘর্মগ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে। ফলে ঘামাচির সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
৬. চন্দন ও হলুদ: ২ টেবিল চামচ চন্দনের গুঁড়োর সাথে ১ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং সামান্য গোলাপজল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ঘামাচির উপর লাগালে একদিকে যেমন আরাম পাবেন, তেমনই ধীরে ধীরে ঘামাচি সেরেও যাবে।
৭. লেবুর রস: একটি পাতিলেবুর রস বের করে ঘামাচির উপর আলতো করে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে দিন। লেবুর রসে থাকা অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ঘামাচির জীবাণু মারতে সাহায্য করে। কিছুক্ষণ পর ত্বক ধুয়ে ফেলুন।
৮. শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা: গরমকালে শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করানো জরুরি। ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে চুলকানির সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই শসা, তরমুজ, লেবুর শরবত, ডাবের জল এবং ফলের রস নিয়মিত খান। শরীর হাইড্রেটেড থাকলে এই সমস্যাগুলি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৯. সঠিক প্রসাধনী দ্রব্যের ব্যবহার: গরমকালে প্রসাধনী দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত। অনেক সময় ভুল প্রোডাক্ট ব্যবহারের কারণে ঘামাচি ও চুলকানির সমস্যা বাড়ে। আপনার ত্বক শুষ্ক না তৈলাক্ত এবং কোন ধরনের প্রোডাক্ট আপনার ত্বকের জন্য ভালো, তা জেনে নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট প্রসাধনী ব্যবহার করুন।
এই সহজ ঘরোয়া টিপসগুলি মেনে চললে গরমের অস্বস্তিকর ঘামাচি ও চুলকানির সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই আর দেরি না করে, আজ থেকেই এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা শুরু করুন এবং গরমেও থাকুন সতেজ ও আরামদায়ক।