পরিবারের ছোট সদস্যরা ভুল করবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। হোক তা জেনে কিংবা না জেনে। শিশুদের ভুল করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে তাদের একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ছোটবেলা থেকেই ঠিক-ভুলের শিক্ষা দেওয়া জরুরি। কিন্তু ছোটদের ভুল-ভ্রান্তি নিয়ন্ত্রণ করা সবসময় সহজ হয় না।
অনেক সময় দেখা যায়, মতের অমিল হলেই সন্তান মুখের উপর তর্ক জুড়ে দেয়। সন্তানের এই অভ্যাসে অনেক বাবা-মা বিরক্ত হয়ে পড়েন। তবে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সন্তান এমন ভুল করলে তাকে অতিরিক্ত বকাঝকা না করে এমন বার্তা দেওয়া উচিত, যাতে সে নিজের ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ পায়।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক সন্তান যদি সবসময় মুখের উপর তর্ক করে, তাহলে আপনি কী করবেন:
>> সন্তানের কথা মন দিয়ে শুনুন: শিশুদের পক্ষে সব কিছু গুছিয়ে বলা কঠিন। তাই তাদের মনের কথা বুঝিয়ে বলার সুযোগ দিন। প্রথমেই ঠিক-ভুল নিয়ে আলোচনা না করে, মনোযোগ দিয়ে সন্তানের কথা শুনুন। এরপর সহজ ভাষায় তাকে বুঝিয়ে বলুন তার ভুল কোথায় হয়েছে এবং সেই ভুল সংশোধনের উপায়ও বাতলে দিন।
>> ধৈর্য ধরুন, রাগারাগি নয়: সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সময় একেবারেই রাগারাগি করবেন না। বরং ধৈর্য ধরে শান্তভাবে তার সাথে কথা বলুন। সন্তানের তর্ক করার কারণ বোঝার চেষ্টা করুন। তাকে বুঝিয়ে বলুন যে ভুল মানুষ মাত্রই হয়, এমনকি বাবা-মাও কখনো কখনো ভুল করে বসেন। দেখবেন, এতে শিশুর পক্ষে নিজের ভুল স্বীকার করা সহজ হবে।
>> ভুলকে খারাপ তকমা দেবেন না: ভুল-ভ্রান্তিকে শুরুতেই খারাপ বলে চিহ্নিত করবেন না। এতে সন্তান ভুল স্বীকার করতে ভয় পাবে এবং ভুল করে ফেললে আরও বেশি তর্ক করার প্রবণতা দেখাতে পারে। সন্তানকে বোঝান যে ভুল করে ফেললে তা স্বীকার করার সাহস একজন ভালো মানুষ হওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
>> সংবেদনশীল হোন: সংবেদনশীলতা যেকোনো সম্পর্ক ভালো রাখার মূল চাবিকাঠি। অনেক সময় সন্তান হয়তো ঠিক কথাই বলছে, কিন্তু শুধু তর্ক করছে ভেবে বাবা-মা তা মানতে চান না। মনে রাখবেন, এটি ঠিক-ভুলের প্রতিযোগিতা নয়। প্রতিটি ভুল থেকেই আমরা কিছু না কিছু শিখি। এই কথা শুধু সন্তানদের জন্যই নয়, অভিভাবকদের ক্ষেত্রেও সত্যি। সন্তানের ভুল শুধরানোর পাশাপাশি নিজেদের ভুলগুলিও বিবেচনা করুন।
সন্তানের ভুলগুলি শুধরানোর জন্য অতিরিক্ত শাসনের পরিবর্তে সহানুভূতিশীল এবং ধৈর্যশীল মনোভাব পোষণ করুন। তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা করুন এবং তাদের ভুল থেকে শিখতে উৎসাহিত করুন। দেখবেন, আপনার এই ইতিবাচক আচরণ সন্তানকে একজন দায়িত্বশীল ও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।