মুরগির পা নয়, কলিজাতেই লুকিয়ে স্বাস্থ্যের ভান্ডার! জানুন এর অবিশ্বাস্য উপকারিতা

যারা আমিষভোজী, তাদের মেনুতে মুরগির মাংস থাকবেই – একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। অনেকেই তো প্রতিদিন চিকেনের স্বাদ নিতে অভ্যস্ত। মুরগির মাংস নিঃসন্দেহে আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে অবাক করা বিষয় হলো, চিকেন খাওয়ার সময় বেশিরভাগ মানুষই মুরগির পা খেতে পছন্দ করেন। অথচ অনেকেই জানেন না যে মুরগির পায়ের চাইতেও বেশি পরিমাণে পুষ্টি লুকিয়ে আছে মুরগির কলিজাতে। আজ আমরা জেনে নেব মুরগির কলিজা খেলে শরীরের আসলে কী কী উপকার হতে পারে।

মুরগির কলিজাতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার ছাড়াও আরও অনেক উপকারী উপাদান বিদ্যমান। যার ফলে মুরগির কলিজা খেলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অনেক উপকৃত হয়।

বড় কোনো অপারেশনের পর, প্রচুর রক্তক্ষরণের পর, গর্ভাবস্থায়, সন্তান জন্মদান বা মাতৃদুগ্ধ দানকালীন সময়ে কলিজা খাওয়া খুব উপকারী। তবে হৃৎপিণ্ডের বাইপাস সার্জারি বা রিং পরানো, উচ্চ রক্তচাপজনিত রক্তক্ষরণের পরে কিন্তু কলিজা খাওয়া ঠিক নয়। কারণ, এতে দেহে বৃদ্ধি পায় কোলেস্টেরলের পরিমাণ। শিশু থেকে ৪০ বছর বয়স্ক মানুষের জন্য যথেষ্ট দরকারি খাদ্য উপাদান হলো কলিজা। কলিজায় ভিটামিন ‘এ’ এবং আমিষ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এই উপাদানগুলো দেহের বর্ধনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।

কলিজার ভিটামিন চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। অন্যদিকে ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের জন্য খুবই লাভদায়ক। মুরগির কলিজাতে যে ফাইবার ও আয়রন আছে তা শরীর ও হার্টের জন্য অনেক উপকারী। মুরগির কলিজাতে ভিটামিন-এ এবং বি কমপ্লেক্স থাকে। যার ফলে চোখের জ্যোতির সমস্যা ও ডায়াবেটিসের মতো অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। যদি আপনার শরীর খুব রোগা হয় তবে আপনি মুরগির কলিজা খেতে পারেন প্রতিদিন। এতে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে খুব তাড়াতাড়ি।

কলিজায় আরও রয়েছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন বি-সিক্স। কলিজার ভিটামিন ‘এ’ শীতকালীন ঠান্ডা-কাশির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শরীরকে রক্ষা করে। আমাদের শরীরের শিরা-উপশিরার ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়। কলিজার কোলাজেন ওইলাস্টিন নামক উপকরণ এই শিরা- উপশিরার দেয়ালকে প্রসারিত করে। ফলে রক্ত প্রবাহ সহজ হয়। সেলেনিয়াম নামের আরও একটি জরুরি উপাদান আছে এই কলিজায়। সেলেনিয়াম ক্লোন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এছাড়াও সেলেনিয়াম শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, সংক্রমণ, শরীরের জয়েন্টে ব্যথা, কৃমির পরিমাণ কমাতেও সাহায্য করে। আমাদের শরীরে ঠান্ডা জনিত জ্বর, টনসিলাইটিস, সর্দি সৃষ্টিকারী ভাইরাস নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে জিংক। কলিজায় রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে জিংক। তাই শরীরের জিংকের চাহিদা মেটানোর জন্য কলিজা খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। ছোটদের জন্যও মুরগির কলিজা খুব উপকারী। তাই এবার থেকে আপনার খাদ্য অভ্যাসে এই পুষ্টিকর খাবারটি যোগ করুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy