কখন কার সঙ্গে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠবে, তা বলা সত্যিই কঠিন। চলার পথে, কর্মক্ষেত্রে কিংবা শিক্ষাঙ্গনে হঠাৎই কেউ ভালো লেগে যেতে পারে। প্রায়শই দেখা যায়, ছেলেরা তাদের সিনিয়র মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হন। তবে সমবয়সীর প্রতি ভালো লাগা তৈরি হলেও, অনেকেই সামাজিক বা পারিবারিক কারণে তা প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করেন।
অথচ মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, সমবয়সীর সঙ্গে সম্পর্কই দাম্পত্য জীবনের শ্রেষ্ঠ সুখ ও শান্তির উৎস হতে পারে। এই ধরনের সম্পর্কের বেশ কিছু সুবিধাও রয়েছে। আসুন, সমবয়সীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা যাক:
শাসনের অভাব: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছোটখাটো বিষয়ে মতবিরোধ প্রায়ই দেখা যায়। কখনো কখনো স্ত্রীকে তার দোষ না থাকা সত্ত্বেও স্বামীর কথা নীরবে শুনে যেতে হয়। কিন্তু সমবয়সী স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি সাধারণত তৈরি হয় না। এখানে স্বামী যেমন তার স্ত্রীকে কোনো বিষয়ে বলতে পারেন, তেমনই স্ত্রীও তার স্বামীকে ভালো-মন্দ নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখেন। একে অপরের উপর কর্তৃত্ব ফলানোর সুযোগ কম থাকায় দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া ও অশান্তি অনেকাংশে হ্রাস পায়। দু’জন একসঙ্গে পথ চলেন, নতুন কিছু শেখেন এবং একে অপরের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পান।
সহজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ: সমবয়সী স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সমস্যা খুব সহজেই বুঝতে পারেন। কোনো ভুল বা সঠিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘ বিতর্ক বা ঝগড়া হয় না। কেউই কারো উপর নিজেদের মতামত চাপিয়ে দিতে পারেন না এবং একে অপরের উপর দোষারোপ করার প্রবণতাও কম থাকে। সমবয়সী হওয়ার কারণে তারা একই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যান, যা তাদের মধ্যে বোঝাপড়া আরও দৃঢ় করে তোলে এবং যেকোনো সিদ্ধান্ত সহজে নিতে সহায়ক হয়।
একসঙ্গে কাজ করার সুবিধা: সংসারের যেকোনো কাজ নিয়ে দু’জনের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তারা হাসিমুখে একসঙ্গে কাজ করতে পারেন এবং কাজের দায়িত্ব নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতে পারেন। অফিসের সময় বা ছুটির দিনে তারা একে অপরের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব দেখান, যা পারিবারিক জীবনকে আরও সহজ ও আনন্দময় করে তোলে।
দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসা: যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের কোনো পার্থক্য থাকে না, তখন তাদের মধ্যে ভালোবাসা ও মান-অভিমান সমানভাবে বিরাজ করে। তারা একে অপরের ভালো-মন্দ এবং ঠিক-ভুল বুঝতে পারেন। ফলে যেকোনো পরিস্থিতিতে একে অপরের পাশে থাকা তাদের জন্য সহজ হয়। এই বোঝাপড়া এবং পারস্পরিক সম্মান দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসার ভিত্তি স্থাপন করে, যা দাম্পত্য জীবনকে সুখ ও শান্তিতে পরিপূর্ণ রাখে।
পরিশেষে বলা যায়, সামাজিক দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে সমবয়সীর প্রতি ভালো লাগাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ একটি সুস্থ ও সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য সমবয়সী সম্পর্কের গুরুত্ব অপরিসীম।