হাল ফ্যাশনে জিন্স প্যান্ট নারী-পুরুষ উভয়ের কাছেই অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পোশাক। আরামদায়ক এবং সহজে মানিয়ে নেওয়া যায় বলে জিন্সের চাহিদা সবসময়ই তুঙ্গে। বিশেষ করে টাইট-ফিটিং জিন্স তরুণ প্রজন্মের পছন্দের শীর্ষে। তবে ফ্যাশনের এই অনুষঙ্গটি দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারের ফলে শরীরে ডেকে আনতে পারে নানা ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা। অনেকেই এই বিষয়টি এড়িয়ে যান অথবা এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অবগত নন। দৈনিক ঘণ্টার পর ঘণ্টা টাইট জিন্স পরিধান করলে কী কী সমস্যা হতে পারে, আসুন জেনে নেওয়া যাক:
স্কিনি প্যান্ট সিনড্রোম: স্কিনি জিন্স দেখতে ফ্যাশনেবল হলেও দীর্ঘ সময় ধরে এটি পরে থাকলে পায়ের পেশি ও স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। জিন্সের অতিরিক্ত চাপ এবং আঁটসাঁট বেল্টের সংমিশ্রণ উরুর সামনের অংশে অসাড়তা, ব্যথা ও ঝিঁঝিঁ অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারে। চিকিৎসকদের কাছে এটি ‘স্কিনি প্যান্ট সিনড্রোম’ নামেই পরিচিত।
ধীর রক্ত সঞ্চালন: টাইট জিন্স পরিধানের কারণে শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যেতে পারে। এর ফলে শরীরের নিম্নাংশ ভারী ও ক্লান্ত অনুভূত হতে পারে। কোমরের চারপাশে খুব আঁটসাঁট পোশাক পরিধানের ফলে রক্তনালী সংকুচিত হয়ে রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে হৃৎপিণ্ড এবং অন্যান্য অঙ্গে রক্ত পৌঁছাতে সমস্যা হতে পারে।
অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি বৃদ্ধি: টাইট জিন্স অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা বাড়াতে পারে। এটি অনেকের মধ্যে একটি সাধারণ পেটের সমস্যা। এমনকি আপনি যদি সুস্থও থাকেন এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় না ভোগেন, তবুও টানা দুই সপ্তাহ টাইট পোশাক পরলে এই সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
পিঠে ব্যথার কারণ: টাইট জিন্স পিঠ ও নিতম্বের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট করে। নিয়মিত এই সমস্যা হতে থাকলে মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিক বাঁক সৃষ্টি হতে পারে এবং ডিস্কের উপর চাপ বাড়তে পারে। যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী পিঠ ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রজনন স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, টাইট জিন্সের ব্যবহার প্রজনন স্বাস্থ্যের উপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। জিন্স নিঃসন্দেহে একটি ক্লাসিক পোশাক, তবে প্রতিদিন এটি পরিধান করা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। এর ফলে গোপনাঙ্গে সংক্রমণ ও জ্বালা অনুভূত হতে পারে, যা ভালভোডাইনিয়ার লক্ষণ। গবেষকদের মতে, যেসব নারীরা সপ্তাহে চারবারের বেশি টাইট ফিটিং জিন্স পরেন, তাদের ভালভোডাইনিয়া হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।
সুতরাং, জিন্স পরিধান করলেও অতিরিক্ত টাইট ফিটিং এড়িয়ে চলুন। একইসঙ্গে আঁটসাঁট পোশাকের পরিবর্তে ঢিলেঢালা পোশাক পরার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। ফ্যাশনের পাশাপাশি নিজের স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখা জরুরি।