আজকাল চল্লিশের গণ্ডি পেরোতে না পেরোতেই শরীরে বাসা বাঁধছে ব্লাড সুগার। এর প্রধান কারণগুলির মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং ভুল খাদ্যাভ্যাস অন্যতম। বিশ্বজুড়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, এবং আক্রান্তের নিরিখে ভারত তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সুগারের সমস্যা থাকলে কার্বোহাইড্রেট, বিশেষ করে ভাত কম পরিমাণে খাওয়ার একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। তবে বাঙালিরা তো অন্তত একবেলা ভাত ছাড়া তৃপ্তি পান না। কিন্তু সত্যিই কি ভাত খেলে ব্লাড সুগার বাড়ে? আসুন, জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
আসলে, ডায়াবেটিস রোগীদের ভাত খাওয়ার পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হওয়া কমে যেতে পারে। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের কতটা কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করছেন, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা একবারে বেশি পরিমাণে না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পরামর্শ দেন।
ডায়াবেটিসে ভাত খেলে শরীরে কী প্রভাব পড়ে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কাপ সাদা ভাতে প্রায় ৫৩.৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। যখন ডায়াবেটিসের কোনো রোগী কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বা পানীয় গ্রহণ করেন, তখন সেটি গ্লুকোজে ভেঙে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ গড়ে প্রতিদিন ৬৩০ গ্রাম চাল খান, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়।
ডায়াবেটিসে সাদা ভাতের বদলে কী খাওয়া যায়?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভাত যত কম খাওয়া যায়, ততই ভালো। আর খেলেও সাদা ভাত পরিহার করা উচিত। সাদা ধানকে চকচকে করার জন্য পলিশ করা হয়, যার ফলে ভিটামিন বি-এর মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
সাদা ভাতের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস বা লাল চাল বেছে নেওয়া যেতে পারে। ব্রাউন রাইসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
তবে অনেক পুষ্টিবিদ এও মনে করেন যে, প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাটের সঙ্গে সঠিক সামঞ্জস্য বজায় রেখে পরিমিত পরিমাণে ভাত খেলে তেমন কোনো ক্ষতি নেই। মূল বিষয় হল কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং একটি সুষম খাদ্য তালিকা অনুসরণ করা।
