বহুগামিতা বা সঙ্গীর প্রতারণা যেকোনো গভীর সম্পর্কের ভিত নাড়িয়ে দিতে পারে। বিশ্বাস ভেঙে চুরমার করে দিতে পারে ভালোবাসার বাঁধন। তবে অবাক করার মতো বিষয় হলো, বহু নারীই তাদের স্বামী বা প্রেমিকের কুকর্মের প্রমাণ হাতে পাওয়ার পরেও তাদের ক্ষমা করে দেন। কিন্তু কেন এমনটা হয়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই সম্প্রতি একটি সংস্থা একটি সমীক্ষা চালায়। সেই সমীক্ষায় উঠে আসা কিছু প্রধান কারণ তুলে ধরা হলো:
ভালোবাসার বাঁধন: সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বেশিরভাগ নারীই জানিয়েছেন যে তাদের সঙ্গী প্রতারণা করা সত্ত্বেও তারা তাদের ভালোবাসা ত্যাগ করতে পারেননি। গভীর আবেগ এবং দীর্ঘদিনের সম্পর্কের টান তাদের ক্ষমা করতে বাধ্য করেছে।
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা: কেউ কেউ মনে করেন, প্রতারণার মতো কঠিন পরিস্থিতির পরেও সম্পর্ককে মেরামত করার সুযোগ দেওয়া উচিত। তারা বিশ্বাস করেন, আলোচনার মাধ্যমে এবং দু’জনের চেষ্টায় সম্পর্ককে পুনরায় আগের মতো সুন্দর করে তোলা সম্ভব।
স্বামীর সততায় মুগ্ধতা: এক নারী জানান, তার স্বামী নিজেই এসে তার প্রতারণার কথা স্বীকার করেছিলেন। স্বামীর এই সততা তাকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে তিনি তাকে ক্ষমা না করে থাকতে পারেননি।
নিজের অতীত ভুলের অনুশোচনা: আরেকজন নারী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার সঙ্গীকে সন্দেহ করছিলেন এবং তার ফোনে আপত্তিকর ছবি ও চ্যাট খুঁজে পান। প্রথমে তিনি খুব রাগান্বিত হলেও, পরে মনে পড়ে যে তিনিও একসময় তার সঙ্গীকে প্রতারণা করেছিলেন, যা তার সঙ্গী জানতে পারেননি। নিজের ভুলের কথা মনে আসতেই তিনি তার স্বামীকে ক্ষমা করে দেন।
সন্তানদের ভবিষ্যতের চিন্তা: অনেক নারীই জানিয়েছেন যে প্রতারণা ধরা পড়ার পরে বিচ্ছেদের পথে হাঁটলে তাদের সন্তানদের জীবন নষ্ট হয়ে যেত। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তারা বাধ্য হয়ে সবকিছু মেনে নিয়েছেন।
হীনমন্যতা ও ভুল ধারণা: চমকপ্রদ এক স্বীকারোক্তিতে এক নারী জানান, তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করতেন যে দীর্ঘ দাম্পত্যের পর তিনি আর আগের মতো যৌনতৃপ্তি পান না এবং এর জন্য তার (স্ত্রীর) যৌন অনীহাই দায়ী। এই কথাগুলো শুনে তিনি এক ধরনের হীনমন্যতায় ভুগতে শুরু করেন এবং সেই হীনমন্যতা থেকেই স্বামীর কুকর্ম মেনে নিয়েছিলেন।
সম্পদের লোভ: সবচেয়ে স্পষ্ট এবং সম্ভবত বিতর্কিত উত্তর দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক তরুণী। তিনি সরাসরি জানিয়েছেন যে তার প্রেমিক প্রচুর অর্থের মালিক। যতদিন তিনি তাকে দামী দামী উপহার দিচ্ছেন, ততদিন তার বাইরের কার্যকলাপ নিয়ে তিনি কোনো আপত্তি করবেন না।
এই সমীক্ষায় উঠে আসা বিভিন্ন কারণগুলি সম্পর্কের জটিলতা এবং নারীদের মানসিকতাকে তুলে ধরে। ভালোবাসার গভীরতা, সম্পর্কের প্রতি দায়বদ্ধতা, সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা, ব্যক্তিগত দুর্বলতা এমনকি বৈষয়িক লোভও অনেক সময় নারীদের সঙ্গীর প্রতারণা মেনে নিতে বাধ্য করে। এই ফলাফলগুলি সম্পর্কের বাস্তবতা এবং ক্ষমার মতো জটিল আবেগের বিভিন্ন দিক উন্মোচিত করে।