জেনে নিন হিমালয়ের গোলাপি লবণের স্বাস্থ্য উপকারিতাসমূহ

বর্তমানে হিমালয়ের গোলাপি লবণ বা পিঙ্ক সল্টের কদর বেড়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, সাধারণ লবণের চেয়ে বেশি গুণ আছে গোলাপি লবণে। দক্ষিণ এশিয়ার হিমালয় পর্বতমালা থেকে এই লবণ সংগ্রহ করা হয় বলে এটি হিমালয়ের গোলাপি লবণ নামেই পরিচিত।

সাধারণ লবণের চেয়ে গোলাপি লবণে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। আর সোডিয়ামযুক্ত লবণ অত্যাধিক গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও হৃদরোগ হতে পারে। তবে গোলাপি লবণে সোডিয়াম থাকলেও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে, যা সাধারণ লবণে থাকে না।

সেক্ষেত্রে গোলাপি লবণের ব্যবহার বেশ স্বাস্থ্যকর। প্রতি এক টেবিল চামচ সাধারণ লবণে ২৩৬০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। যেখানে ১ টেবিল চামচ হিমালয়ের গোলাপি লবণে থাকে ১৬৮০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম। যা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কম।

গোলাপি লবণে পাওয়া যায়- দস্তা, লোহা, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়ামসহ ম্যাগনেসিয়াম। তবে এই লবণের উৎসস্থলের উপর নির্ভর করে এর পুষ্টিগুণ। কিছু গোলাপি লবণের নমুনায় আর্সেনিক, পারদ ও সীসার মতো সম্ভাব্য বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গেছে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

তবে প্রকৃত হিমালয়ের গোলাপি লবণের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। ওজন কমানো থেকে শুরু করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এই লবণ। অন্যদিকে সাধারণ সাদা লবণ যেগুলো আমরা খেয়ে থাকি তা স্বাস্থ্যকর নয়। সে তুলনায় গোলাপি লবণই স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত। জেনে নিন হিমালয়ের গোলাপি লবণের স্বাস্থ্য উপকারিতাসমূহ-

>> শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে গোলাপি লবণ। পালমোনারি রোগ বা সিওপিডির মতো শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য গোলাপি লবণ বেশ উপকারী। যদিও এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। তবে বিজ্ঞানীরা সিওপিডির রোগীদের ক্ষেত্রে গোলাপি লবণের ব্যবহার স্বাস্থ্যকর হিসেবে প্রমাণ পেয়েছেন।

>> গোলাপি লবণে প্রায় ৮৪টিরও বেশি খনিজ উপাদান থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্যদিকে সাধারণ লবণে এসব খনিজ উপাদান থাকে না।

>> সাদা লবণ হয় আয়োডিনযুক্ত। যা গলগণ্ড ও থাইরয়েডের মতো রোগের জন্য দায়ী। সাদা লবণ প্রক্রিয়াজাত করা হয় অ্যান্টি-কেকিং, ব্লিচিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে। এসব প্রক্রিয়াকরণের সময় বেশিরভাগ প্রাকৃতিক খনিজগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। অন্যদিকে গোলাপি লবণ একেবারেই অর্গ্যানিক হয়ে থাকে।

>> শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে গোলাপি লবণ। খাবার বা পানীয়তে এক চিমটি গোলাপি লবণ মিশিয়ে খেলে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকে। ফলে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ হয়। এমনকি দুর্বলতাও কাটে।

>> গোলাপি লবণ খেলে আপনার শরীরে আরও মেলে জিংক, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও আয়োডিন। এ কারণেই পুষ্টিবিদরা গোলাপি লবণ খাওয়ার পরামর্শ দেন।

>> কখনও অতিরিক্ত লবণ খাওয়া উচিত নয়। এতে ওজন বেড়ে যেতে পারে। ওজন বাড়াতে চিনি যেমন শরীরে প্রভাব ফেলে ঠিক তেমনই লবণও ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ওজন কমাতে সাদা লবণের পরিবর্তে গোলাপি লবণ বেছে নিলেও তা পরিমিত গ্রহণ করতে হবে।

>> গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি পরিমাণে লবণজাতীয় খাবার খান তাদের শরীরের অন্যদের তুলনায় বেশি চর্বি জমে। বিশেষ করে কোমরের চারপাশের মেদ বাড়তে থাকে।

>> বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, একজন ব্যক্তির দৈনিক ৫ গ্রামেরও কম লবণ গ্রহণ করা উচিত। যা এক চা চামচের সমান। এই পরিমাণে লবণ গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ থাকবে।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy