জীবনে কিছুই ঠিকঠাক মতো হচ্ছে না! সারাদিন মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে? এমন পরিস্থিতি একজনের নয়। আমাদের চারপাশের অনেকেরই এই পরিস্থিতি। অনেকে হয়তো এমন পরিস্থিতির কারণটা বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন। অনেকে মুখ বুজে থাকেন।
তবে অনেক কিছুর জন্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শৃঙ্খলা রাখতে না পারাটাও বড় কারণ। হয়তো শৃঙ্খল জীবনযাপন করতে পারলেই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এমন দশটি বিষয় তুলে ধরেছেন, এগুলোকে প্রতিদিন সকালের অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে, বদলে যেতে পারে জীবন।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
সকালে নিজের সময়মতোই উঠুন। তবে সেই সময়টা নিয়মিত হয়ে দাঁড়াক। যাতে একটা ছন্দ বজায় থাকে। অর্থাৎ একদিন সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে পড়ছেন, আবার কোনো দিন সকাল ১০টায়! এর মধ্যে শৃঙ্খলা আনা প্রয়োজন।
সকালে উঠে প্রথম কাজই হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা। ঘুমের কারণে একটা বড় সময় শরীরে জলের প্রবেশ হয় না। ফলে এই কাজটিই আগে সারতে হবে। পরিষ্কার করে বললে, আপনার শরীরের ‘ইঞ্জিন’ চালু করতে কাজে দেবে এই জল-পান।
শারীরীক কসরতের অভ্যাস করুন। সকালে নানা এক্সারসাইজের কারণে মুড ভালো হয়, আনন্দ বাড়ে, পুরোদিনের সমস্ত ঝড়ঝাপ্টা সামলানোর মতো মানসিকতা তৈরি হয়ে যায়।
মেডিটেশন প্র্যাক্টিস। কয়েক মিনিট হলেও সমস্ত ভাবনা চিন্তা ভুলে নিজের মনকে স্থির করার চেষ্টা করুন। যা ধ্যানের মাধ্যমে সম্ভব। এতে ফোকাস বাড়বে, সারাদিনের কাজের পরিকল্পনাও গড়ে নেওয়া যাবে।
পরিকল্পনা- অনেকেরই হয়তো মনে হতে পারে, প্রতিদিন আবার পরিকল্পনার প্রয়োজন হয় নাকি! কোথাও বেড়াতে গেলে, কিংবা কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠান, অফিসের প্রোজেক্ট। সবক্ষেত্রেই যেমন পরিকল্পনা প্রয়োজন, তেমনই দৈনিক কাজের ক্ষেত্রেও এটা করা গেলে সব কিছু মসৃণ থাকবে।
সুষম ব্রেকফাস্ট- অনেকেরই রুটিন মেনে জীবন কাটানোর অভ্যাস নেই। ব্যস্ততার কারণেই হোক বা নিজের প্রতি অবহেলা, ব্রেকফাস্টই করেন না। কিংবা কোনোরকমে একটা দায়সারা ব্রেকফাস্ট করেন। যা একেবারেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ব্রেকফাস্ট হওয়া প্রয়োজন সুষম খাদ্যে পরিপূর্ণ।
স্নুজ বাটনের অভ্যাস ত্যাগ করুন। সহজ করে বললে, অনেকেই সকালে ওঠার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের অ্যালার্ম দিয়ে রাখেন। যদিও অ্যালার্ম বাজলেও স্নুজ করে তার মেয়াদ আরও ১০ মিনিট বাড়িয়ে দেন। এ ভাবে করতে করতে দেখা যায়, যে সময় ওঠার কথা ছিল, তার চেয়ে অনেক পরে বিছানা ছাড়ছেন। প্রথম অ্যালার্মেই উঠে পড়তে পারলে স্লিপ সাইকেলেও উন্নতি হয়।
স্ক্রিন টাইমও কমাতে হবে। সারাদিনে কাজের সূত্রেই হোক নানা কারণে, মোবাইল আমাদের সর্বক্ষণের সঙ্গী। পাশাপাশি ল্যাপটপ কিংবা টেলিভিশনও হতে পারে। সারাদিনের এই কারণে এমনিতেই চোখে এবং মস্তিষ্কে অনেক চাপ পড়ে। ঘুমোনোর আগে বা ঘুম থেকে ওঠার পর খুব প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ব্যবহার যতটা আগে সম্ভব কমাতে হবে।
নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। নিজেকে সম্মান, নিজের কাজের প্রতি ভালোবাসা, সহজ কথায় ভালো কাজে নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দিন। এর ফলে যেমন স্ট্রেস কমবে তেমনই ইতিবাচক মানসিকতাও বাড়বে।
দিনের সবচেয়ে জটিল কাজটার সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করবেন, আগে সেটা জরুরি। সারাদিনে যে সব পরিকল্পনা রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কোনটা, সেটাকে আগে চিহ্নিত করুন, তাতে পরিস্থিতির মোকাবিলায় সুবিধা হবে।