ইদানীং অফিসে কাজের খুব চাপ, সম্পর্কেও সব কিছু ঠিকঠাক চলছে না বলে খুব মানসিক অস্থিরতায় থাকেন? জানেন কি, বাগান করলে আপনার এই মন খারাপের অনেকটাই কমে যেতে পারে? বিশেষ করে গাছ যখন বড়ো হয়, তাতে ফুল বা ফল ধরে তা দেখেও ভারী আনন্দ হয়। যাঁদের ছাদে বা বারান্দায় একটু জায়গা আছে, তাঁরা তো স্বচ্ছন্দে বাগান করতেই পারেন। যাঁদের সেটুকু জায়গাও নেই, তাঁদের জানলার পাটায় যদি দিনে চার-পাঁচ ঘণ্টা মোটামুটি রোদ আসে, তা হলেও দিব্যি কিচেন গার্ডেন তৈরি করে ফেলা যাবে!
গোড়াতেই একগাদা টাকা খরচ করে ফ্যান্সি টব কেনার কোনও দরকার নেই। বাতিল প্লাস্টিকের বোতল, বাথটব বা বালতিতেও চমৎকার গাছ হতে পারে। পুরনো বাথটবে তো ক্যাপসিকাম, মুলো, ফুলকপিও ফলানো সম্ভব। মাটিটা অবশ্য ভালো কোনও নার্সারি থেকে কেনারই পরামর্শ দেবো আমরা। কেনার পর মাটির সঙ্গে খানিকটা গোবর মিশিয়ে নিতে পারলে খুব ভালো হয়। একটা মুখবন্ধ জায়গায় আনাজ আর ফলের খোসা, চা পাতা, চাল ধোওয়া জল ইত্যাদি জমিয়ে রাখুন। কিছুদিনের মধ্যেই খুব ভালো অরগ্যানিক সার তৈরি হয়ে যাবে।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কী ফলাতে চান? যাঁরা ফুলের ভক্ত, তাঁদের জানানো যাক, সামান্য পরিশ্রমেই জবা, গাঁদা, গোলাপ, রঙ্গন, বোগেনভিলিয়া ফোটে। বীজ কিনুন স্থানীয় নার্সারি থেকে। গরমকালে সাধারণত দিনে দু’বার জল দিতে হয়। শীতের দিনে দু’দিনে একবার দিলেও চলে। ঠিক কতটা জল বা সার দেবেন, নার্সারি থেকেই জেনে নিন। গাছের পরিচর্যার পরামর্শওয়ালা ভালো বইও কিনতে পাওয়া যায় আজকাল।
ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, কারিপাতা, পালংশাক, পুঁইশাকও বাড়িতে সহজেই ফলানো সম্ভব। বাজার থেকে গোড়াসমেত পুদিনা কিনে এনে মাটিতে লাগালেই গাছ হয়। গোটা ধনে আগের রাতে সামান্য উষ্ণ জলে ভিজিয়ে রেখে পরদিন পুঁতলেই তাজা ধনেপাতা ফলবে। খুব ভালো লঙ্কা আর লেবুও ধরে সামান্য পরিচর্যাতেই। করতে পারেন লাউ, ঢ্যাঁড়শ, উচ্ছে, পেঁয়াজও। বিশেষ করে বাড়িতে ফ্যান্সি রান্নাবান্না করার অভ্যেস যাঁদের আছে, তাঁরা গাছপেঁয়াজ বা লেমনগ্রাস করে রাখলে হাতের কাছেই তাজা কাঁচামাল পেয়ে যাবেন।