হাত-পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। কখনো কয়েক সেকেন্ড আবার কখনো কয়েক মিনিট পর্যন্ত এ সমস্যা হতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে টেম্পোরারি প্যারেসথেশিয়া বলা হয়। ইংরেজিতে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ নামেও পরিচিত ঝিঁঝিঁ ধরার সমস্যাটি।
দীর্ঘক্ষণ হাত বা পায়ের উপর চাপ পড়লে কিংবা একই ভঙ্গিমায় অনেক্ষণ শুয়ে বা বসে থাকার কারণে যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় তাকেই ঝিঁঝিঁ ধরা বলা হয়। এ সমস্যাকে সাধারণ ভাবলেও কারো কারো ক্ষেত্রে তা কঠিন রোগের কারণ হতে পারে।
ঝিঁঝিঁ ধরার অনুভূতিটি তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- প্রথম ধাপে ৩-৪ মিনিটের জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়। তখন মনে হয় ত্বকের ভেতর অসংখ্য পিঁপড়া যেন হেঁটে বেড়াচ্ছে। এ বিষয়কে কমপ্রেশন টিঙ্গলিং বলা হয়।
দ্বিতীয় ধাপে আবার ঝিঁঝিঁ ধরার সময়কাল একটু বেশিক্ষণ থাকে, অর্থাৎ ৫-১০ মিনিট পর্যন্ত তা চলমান থাকে। এ ধাপে হাতে বা পায়ের সংশ্লিষ্ট অংশটি অসাড় হয়ে আসে।
শেষ ধাপটি শুরু হয় চাপ অপসারণ করার পর। একেই ইংরেজিতে পিনস অ্যান্ড নিডলস বলা হয়। এ সময়ে মনে হয় যেন অসংখ্য সুঁচ দিয়ে একসঙ্গে ওই অংশে খোঁচা দেওয়া হচ্ছে। তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা ও খোঁচা লাগার অনূভুতি চলে যায়।
কেন ঝিঁঝিঁ ধরে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবদেহের সর্বত্র অসংখ্য স্নায়ু আছে। সেগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করে।
বসা বা শোয়ার সময় কোনো স্নায়ুতে চাপ পড়লেই শরীরের ওই অংশ থেকে তথ্য মস্তিষ্কে ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারে না।
পাশাপাশি দেহের ওই অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার উপরও প্রভাব পড়ায় রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে ঝিঁঝিঁ ধরতে পারে।
যে ৩ রোগের লক্ষণ
সাধারণত ঝিঁঝিঁ ধরার পর ভঙ্গি বদলানো হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যাটি সেরে যায়। তবে এ সমস্যা যদি ক্রমাগত হতেই থাকে তাহলে ডাক্তার দেখানো জরুরি।
যদি বারবার এ সমস্যা দেখা দেয় ও দীর্ঘ সময় ধরে চলে তাহলে সমস্যাটি গুরুতর হতে পারে। যেমন মেরুদণ্ড ও মস্তিষ্কের সমস্যা থেকে দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এমনকি ডায়াবেটিসের কারণে ঝিঁঝিঁ ধরার সমস্যা বারবার হতে পারে। তাই এ সমস্যাকে সাধারণ ভেবে হেলাফেলা করা উচিত নয়।bs