মোবাইলের উপর মানুষের নির্ভরতায় যোগাযোগ হয়তো নিবিড় হয়েছে। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, মোবাইলের কারণে বাড়ছে জীবাণুঘটিত সংক্রমণের বিপদও!সম্প্রতি বিদেশের বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে, উন্নত দেশের নাগরিকদের স্মার্টফোনে লেগে থাকা জীবাণুর পরিমাণ নাকি শৌচাগারের কমোডের থেকেও বেশি! সেই সব জীবাণুর মধ্যে রয়েছে ‘ই কোলাই’-সহ নানা ধরনের রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়াও।যদিও দেশে এমন সবিস্তার সমীক্ষা এখনও হয়নি। তবে মানুষের অভ্যাস যে পথে হাঁটছে, তাতে এখানেও সমীক্ষা করলে ফলাফল ভিন্ন কিছু আশা করা যায় না। বড়জোর উনিশ-বিশ হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
২০১১ সালে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এবং ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল, সে-দেশে প্রতি ছ’টি মোবাইলের মধ্যে একটিতে ফিক্যাল ব্যাক্টিরিয়া (মল থেকে উৎপন্ন) রয়েছে। সেই সঙ্গে পাওয়া গিয়েছিল ই-কোলাইয়ের মতো ব্যাক্টিরিয়াও।
জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানী এবং পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, তরুণ প্রজন্ম মোবাইল নিয়ে সর্বত্র যাতায়াত তো করছেই। অনেকে বাড়ির একেবারে খুদে সদস্যকে ভোলাতেও হাতে মোবাইল ধরিয়ে দিচ্ছেন। সেই শিশুটি মোবাইল মুখেও দেয়। খেতে খেতে অনেকে কথা বলেন মোবাইলে, খাবার টেবিলেও মোবাইল রেখে দেন। দু’টোই সমান বিপজ্জনক।
“শৌচাগারে গেলে ভাল ভাবে সাবান দিয়ে হাত-পা-মুখ ধুতে বলা হয়। কিন্তু মোবাইল তো আর ধোয়া যায় না। তার উপরে স্মার্টফোনে ‘কাভার’ থাকে। মোবাইল ফোন যদিও বা মুছে নেওয়া যায়, কিন্তু আবরণের আড়ালে তো রুমাল পৌঁছয় না,” বললেন এক পরিবেশবিদ।
ব্রিটেনের অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাক্টিরিয়োলজির অধ্যাপক হিউ পেনিংটনের মতে, মোবাইল দিনের মধ্যে বহু বার শরীরের সংস্পর্শে আসে। তাই সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।
ভারতের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশবিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সর্বত্র ব্যবহারের ফলে মোবাইল হয়ে উঠছে জীবাণুর অন্যতম বাহক। শিশুরা হাত এবং যে-কোনও জিনিস বারবার মুখে দেয়। তাই ওদের মোবাইল দেওয়া উচিত নয়।
“অ্যাসিনেটোব্যাক্টর, সিউডোমোনাস, স্টেফাইলোকক্কাসের মতো ব্যাক্টেরিয়া এভাবে বেশি ছড়ায়। আমজনতা, চিকিৎসক— সবার জন্যই এই বিষয়ে আরও সচেতনতা জরুরি। শুধু শিশু নয়, এই জীবাণু সব বয়সের মানুষেরই ক্ষতি করতে পারে,” বলছেন স্বাতীদেবী।