বাড়িতে ওয়্যাক্স তৈরির জন্য যা যা প্রয়োজন, সাথে জেনেনিন নিয়মকানুন

অনেকেই বলবেন, ওয়্যাক্সিংয়ের মতো একটা ঝামেলার কাজ বাড়িতে করার দরকারটাই বা কী? এপিলেটর আছে, আজকাল তো নানা ভালো মানের লেডিস শেভারও বেরিয়ে গিয়েছে বাজারে! কিন্তু ওয়্যাক্সিং যাঁরা করেন, তাঁরাই জানেন তার মহিমা! যাঁদের হেয়ার গ্রোথ খুব বেশি, তাঁদের কথা আলাদা। নতুবা মোটামুটি মাসখানেক মখমলের মতো কোমল ত্বক স্পর্শ করলে নিজেরই ভালো লাগে! তবে হ্যাঁ, রোম খুব ছোট হলে কিন্তু ওয়্যাক্সিং করতে গিয়ে একটু বেশি ব্যথা পাবেন, কারণ তা ধরতে অসুবিধে হয়। কোনও কারণে পার্লারে যেতে পারছেন না, কিন্তু হেয়ার গ্রোথ বেড়ে গিয়েছে বলে স্লিভলেস বা শর্ট ড্রেস পরাও বন্ধ হতে চলেছে প্রায়? এই পরিস্থিতিতে রান্নাঘরের জিনিসপত্র দিয়েই ওয়্যাক্স তৈরি করে নেওয়া সম্ভব।

ওয়্যাক্স করার আগে এক্সফোলিয়েট করবেন না, তাতে ত্বক কেটে-ছড়ে যেতে পারে এবং সে অবস্থায় ওয়্যাক্স করালে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। ত্বকে ময়েশ্চরাইজ়ার ব্যবহার করারও কোনও দরকার নেই। ময়েশ্চরাইজ়ার ত্বক আর ওয়্যাক্সের মাঝে দেওয়াল তৈরি করে। খুব ভালো করে হাত-পা আগে ধুয়ে নেবেন এবং সম্ভব হলে হাতে-পায়ে-বগলে বরফ ঘষে নিন। তাতে ওয়্যাক্সিংয়ের ফলে বাড়তি যন্ত্রণা অনুভব করবেন না।

বাড়িতে ওয়্যাক্স তৈরির জন্য যা যা প্রয়োজন:
1 কাপ ব্রাউন সুগার
2 টেবিলচামচ পাতিলেবুর রস
2 টেবিলচামচ জল
রান্নার গভীর পাত্র
ওয়্যাক্স করার উপযোগী টিস্যু পেপার

পদ্ধতি:
পাত্র আঁচে বসিয়ে প্রথমে দিন ব্রাউন সুগার। তার পর লেবুর রস আর জল দিন।
খুব কম আঁচে বসিয়ে রাখুন। মিশ্রণটা ফুটতে আরম্ভ করলে নেড়ে দিন আর আঁচও বাড়ান।
আঁচ কমিয়ে দিন, মিশ্রণটায় ক্রমে সোনালি রং ধরবে। এক চাচামচ মিশ্রণ তুলে অল্প ঠান্ডা করুন।
মধুর চেয়ে একটু ঘন হলেই কাজ হয়ে যাবে।
পাত্রে ঢেলে নিন, আধ ঘণ্টা পর ব্যবহার করা যাবে। দরকারে তখন আর একটু গরম করে নিতে পারেন।

ব্যবহারের নিয়মকানুন:
ওয়্যাক্স যেহেতু গরম থাকে, তাই খুব নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন কোনও জায়গায় তা রেখে তবেই কাজ শুরু করা উচিত। অসাবধানে হাতে-পায়ে পড়ে গেলেও দারুণ বিপর্যয় হতে পারে। ওয়্যাক্স গায়ে লাগানোর জন্য একটা অ্যাপ্লিকেটর লাগবে। স্টিলের চামচ বা বাটার নাইফ দিয়ে কাজটা সেরে ফেলার চেষ্টা করবেন না, স্টিলের জিনিস কিন্তু খুব গরম হয়ে যায়, অসাবধান হলেই ছ্যাঁকা খাবেন। আপনার রোমের বাড় যেদিকে হয়, সেদিক বরাবর ওয়্যাক্স লাগাতে হবে। তার পর ওয়্যাক্স টিস্যু নিয়ে তার উপর চেপে বসিয়ে দিন। হেয়ার গ্রোথের উলটোদিকে টেনে টিস্যুটা তুলতে হবে। এক ধাক্কায় তুলে না ফেলতে পারলে কিন্তু ত্বক মসৃণ থাকবে না, রোম ছিঁড়েও যেতে পারে। ওয়্যাক্স করার পর প্রথমে একটা নরম কাপড় ঈষদুষ্ণ জলে ভিজিয়ে পরিষ্কার করে মুছে নিন। তার পর ঠান্ডা জলে ডোবানো কাপড় নিংড়ে মুছে নেবেন আলতো হাতে। স্বাভাবিকভাবে শরীরটা শুকনো হতে দিন। কোনও জায়গা লালচে হয়ে গেলে বরফ ঘষুন।

ওয়্যাক্স করার পর কোন কোন নিয়ম মানবেন:
ওয়্যাক্স করেই রোদ্দুরে বেরোবেন না: তাতে সান ট্যান হতে পারে, রোদে ত্বকের রং জ্বলে যাওয়াও বিচিত্র নয়।
ঢিলেঢালা পোশাক পরুন: ওয়্যাক্স করার সময় আপনার ত্বকের উপর বেশ ভালোই অত্যাচার হয়েছে। তাই তখনই আর টাইট পোশাক পরবেন না।
এক্সফোলিয়েট করবেন না: ওয়্যাক্সিংয়ের ফলে আপনার ত্বক সব মৃত কোষ থেকে মুক্তি পেয়েছে, তাই তখনই আর এক্সফোলিয়েট করার দরকার নেই। তাতে ত্বকে খুব আঘাত লাগবে।
ভারী ক্রিম লাগাবেন না: ভারী ক্রিম আপনার ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে। তাই ওয়্যাক্সিংয়ের পর পরই তা ব্যবহার করার কোনও প্রয়োজন নেই।

বিশেষ টিপস:
ভুলেও পুরোনো কাপড় বা জিনসের টুকরো দিয়ে ওয়্যাক্স করবেন না। তা কখনওই পুরোপুরি পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না, ফলে ইনফেকশনের আশঙ্কা থেকে যায়। ডিসপোজ়েবল স্ট্রিপ ব্যবহার করাই সবচেয়ে নিরাপদ

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy