আপনি যখন আপনার ডেস্কে কাজে মগ্ন, তখন ঘাড়ে ব্যথা কি মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে? তাহলে জেনে রাখুন, এই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডেস্কে বসে কাজ করার ফলে ঘনিয়ে আসছে বিপদ। বিশেষ করে যারা দিনের অনেকটা সময় বসে কাটাতে বাধ্য হন, তারাই বেশি ডরম্যান্ট বাট সিনড্রোমে আক্রান্ত হতে পারেন। আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে থাকলে ডিস্কে, ঘাড়, ও পিঠে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
হাত-পা যদি প্রয়োজনীয় ব্যায়াম না পায়, তাহলে তা ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে। ঠিক সেই একই নিয়মে দুর্বলতা বাসা বাঁধতে আরম্ভ করে আপনার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিতম্বেও। তারই প্রকাশ দেখা যায় হাঁটু আর কোমরের নিচের ব্যথায়।
এবার জেনে নিন দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে…
কার্ডিওভাসকুলার জটিলতা
অনেকক্ষণ ধরে একই ভাবে বসে কাজ করার ফলে উচ্চরক্ত চাপ ও উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। এই কার্ডিওভাসকুলার জটিলতা আপনার জীবনে ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
যখন একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় বসে থাকেন, তখন শরীরের পেশীর কোষগুলো উৎপাদিত ইনসুলিনকে সহজেই সাড়া দেয় না। ফলস্বরূপ, অগ্ন্যাশয় আরও ইনসুলিন তৈরি করে, যা থেকে ডায়াবেটিস হতে পারে।
পেশী অধঃপতনের ঝুঁকি
অনেক সময় ধরে বসে কাজ করা মানুষের বাড়তে থাকে হাইপারলর্ডিস, টাইট হিপস এবং লাম্প গ্লিউটস।
পায়ের সমস্যা
অনেকক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পায়ে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। শিরাতে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে, যার ফলে পা ফুলে যেতে পারে।
চাপের মাত্রা বৃদ্ধি
পেশীর মুভমেন্টের সঙ্গে সঙ্গে মুড ঠিক রাখার যে হরমোন তা রক্ত এবং অক্সিজেনের সঙ্গে সরবরাহ হয়। অতএব, যখন একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় বসে থাকেন তখন পেশির মুভমেন্ট খুব বেশি হয় না। ফলে বাড়তে পারে চাপের মাত্রা।
মেরুদণ্ডের গঠনের ভারসাম্যহীনতা
দীর্ঘ সময় ধরে বসার ফলে মেরুদন্ডসহ ডিস্কের ক্ষতি, কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
যখনই কোনো ব্যক্তির পোস্ট্রাল সমস্যা দেখা দেবে, রাতারাতি প্রথমেই এক্স-রে বা এমআরআই স্ক্যান করা প্রয়োজন। তারপরেই নিয়ম মেনেই ব্যায়াম করা বা ফিজিওথেরাপির পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার আরও কিছু সমাধান রয়েছে, তা এবার জেনে নিন…
* সকাল সন্ধ্যা নিয়ম করে যোগব্যায়াম করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
* প্রতি ঘন্টায় অন্তত একবার ৫ মিনিটের জন্য হাঁটাচলা করুন। যার ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকবে।
* প্রতি ঘণ্টায় আপনার হাত পা প্রসারিত করে শারীরকে টানটান করুন।
* কাজ করার সময় খেয়াল রাখুন আপনার পা যেন ফ্লোরের সঙ্গে সমানভাবে লেগে থাকে এবং পিঠ সোজা করে বসুন।
ঘাড়ের ব্যায়াম
সোজাভাবে বসুন, তারপর মাথা ধীরে ধীরে একপাশে কাঁধে রাখুন, পুনরায় বিপরীত দিকেও একই ভাবে কাঁধে মাথা দিন। কাজের ফাঁকে ৫ মিনিটের জন্য ব্যায়ামটি করলে ঘাড়ের সমস্যা দেখা দেবে না।bs