বন্ধু নেই যার, তার জীবন অসম্পূর্ণ। জীবনের গোপনতম কথাও ভাগ করে নেওয়া যায় বন্ধুর সঙ্গে। কিন্তু যদি কোনও বন্ধু আপনার অনুমতি বা ভাগ করে নিতে চাওয়ার তোয়াক্কা না করেই ঢুকে পড়তে চান আপনার ব্যক্তিগত পরিসরে? সে ক্ষেত্রে একই সঙ্গে ব্যাপারটা অস্বস্তিকর আর বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। ওই বন্ধু বা বন্ধুদের মুখোমুখি হতেও তখন ইচ্ছে করে না।
কিন্তু এড়িয়ে যাওয়াটা পথ নয়। বরং অপরের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কেন কিছু মানুষ বিশেষ কৌতূহলী হয়ে পড়েন, সেটা একটা ভেবে দেখার মতো বিষয়। আসলে এঁরা কোনও সামাজিক আদবকায়দায় বিশ্বাসই করেন না এবং মনে করেন যে কোনও বিষয় নিয়ে যে কাউকে প্রশ্ন করা যায়। এবং এমন বন্ধু প্রায় সবার জীবনেই কখনও না কখনও জুটে যায়। তাই জেনে রাখা ভালো কীভাবে সামলাবেন এই অতি কৌতূহলী বন্ধুদের!
নিজের মুখ বন্ধ রাখুন
অপরের মুখ বন্ধ রাখার সবচেয়ে ভালো শর্টকাট নিজের মুখও বন্ধ রাখা। নিজের প্রতিদিনের জীবনের ছোটখাটো খুঁটিনাটি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন না। আপনি নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যত কম তথ্য দেবেন, ওঁরাও তত কম সুযোগ পাবেন আপনার ব্যক্তিগত পরিসরে ঢোকার।
রসবোধ ধরে রাখুন
জটিল পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার একটি জরুরি হাতিয়ার হল রসবোধ। এতে একদিকে যেমন উপযুক্ত জবাব দেওয়া যায়, অন্যদিকে অসভ্যতাও করতে হয় না। যদি কোনও বন্ধু আপনার বেতনের অঙ্ক বা মাসের খরচ নিয়ে প্রশ্ন করেন, তা হলে হালকা ছলেই বলুন, ওটা একটা খুবই গোপন কথা যা শুধু আপনার ট্যাক্স কনসালট্যান্ট বা ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিই জানেন। আশা করা যায়, এ কথা শোনার পর কৌতূহলী বন্ধু আর বাড়তি অস্বস্তিকর প্রশ্ন করবেন না।
মাঝেমাঝে কঠোর হতে শিখুন
যাঁরা আপনার বন্ধু হলেও ততটা ঘনিষ্ঠ নন, তাঁদের অতিরিক্ত কৌতূহল শক্ত হাতে মোকাবিলা করতেই হবে। কিন্তু যদি তিনি আপনার ঘনিষ্ঠ হন, তা হলে একটু কৌশলী হতে হবে। সে ক্ষেত্রে এমনভাবে উত্তর দিন যা সংক্ষিপ্ত অথচ যেখান থেকে বাড়তি প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। তবে একটা ব্যাপারে মনস্থির করে রাখুন। প্রশ্নকারী আপনার যত ঘনিষ্ঠই হোন, কাউকে খুশি করার দায় আপনার নেই। পাশাপাশি এটাও বুঝিয়ে দিন, ব্যক্তিগত প্রশ্ন আপনার পছন্দ নয়।
শঠে শাঠ্যং পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন
আপনার কোনও ঘনিষ্ঠ বন্ধু যদি হঠাৎ করেই আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশি কৌতূহলী হয়ে ওঠেন, আর আপনি যদি খুব বেশি রূঢ় না হতে চান, তা হলে পালটা ওঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করতে শুরু করুন। পালটা অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়লে আশা করা যায় বন্ধুটি নিবৃত্ত হবেন!
সরাসরি প্রতিবাদ করুন
অন্য সব উপায় ব্যর্থ হলে সরাসরি জানানো ছাড়া আর উপায়ই বা কী! স্পষ্টভাবে বন্ধুকে বলুন ওঁর এ সব ব্যক্তিগত প্রশ্নে আপনি বিরক্ত হচ্ছেন। এতে যদি বন্ধুবিচ্ছেদ হয়, তা হলেও কিছু করার নেই!