ঘাড়ে কি অসহ্য যন্ত্রণা করছে? কি করলে মুক্তি মিলবে এই সমস্যা থেকে জেনেনিন

বর্তমান সময়ে ঘাড় ব্যথা পরিচিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেকোনও বয়সেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশি সময় ধরে মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে বসে থাকার কারণেই সাধারণত এ সমস্যা দেখা দেয়। আবার ঘাড়ের মাংসপেশিতে টান ধরা, শিরদাঁড়ায় হাড়ের অসুখ, আর্থ্রাইটিস, সারভাইকাল স্পন্ডিলসিস, ইত্যাদি অসুখ থেকেও ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে। ঘাড় ব্যথা এতটাই অস্বস্তিকর যে, একবার শুরু হলে গোটা দিনটাই নষ্ট হয়ে যায়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাড় ব্যথা চিকিৎসার মূল কৌশল হল ব্যায়াম, ধ্যান এবং সঠিক শারীরিক অঙ্গবিন্যাস। ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-

ম্যাসাজ : ঘাড়ের ব্যথা কমাতে ম্যাসাজ একটি চমৎকার ঘরোয়া উপায়। ব্যথা দেখা দিলেই নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েল হালকা গরম করে ঘাড় ও কাঁধে মেখে নিন। এবার ম্যাসাজ করুন। এভাবে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।

আইস প্যাক : ঘাড়ে ব্যথা দেখা দিলেই আইস প্যাক লাগাতে পারেন। কারণ ঠান্ডা তাপমাত্রা প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা নিরাময়ে সহায়তা করে। বরফের টুকরা গ্লাসে বা প্যাকেটে ভরে ব্যথা আক্রান্ত স্থানে দিতে পারেন। আবার তোয়ালেতে কিছু বরফের কিউব রেখে ব্যথার জায়গায় ঘষতে পারেন। এভাবে সারাদিনে দুই থেকে তিন বার করে ১৫ মিনিটের জন্য দিতে থাকুন। এতে আস্তে আস্তে ব্যথা কমবে।

লবণ জলে স্নান : মাংসপেশি টান ধরা থেকে যদি ঘাড়ের ব্যথা হয়ে থাকে, তবে গরম জলে ‘এপসম সল্ট’ মিশিয়ে স্নান করতে পারেন। এই ‘এপসম সল্ট’-এ থাকা সালফেট ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশিতে শিথিল করে ফোলা এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও মানসিক চাপ কমাতে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো করতেও সাহায্য করে।

হাইড্রোথেরাপি : ঘাড়ের ব্যথার জন্য খুবই কার্যকর ঘরোয়া উপায় হচ্ছে হাইড্রোথেরাপি । বাথরুমের শাওয়ার বা ট্যাপের নিচে এই পদ্ধতি খুব সহজেই করা যায়। প্রথমে শাওয়ারের হালকা গরম জল দিয়ে ঘাড়ের ব্যথার জায়গায় ৩ থেকে ৪ মিনিটের জন্য দিতে থাকুন। এরপর ৩০-৬০ সেকেন্ড ওই একই জায়গায় ঠান্ডা জল ঢালতে থাকুন। ১৫ মিনিটের জন্য একইভাবে পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন। এতে ধীরে ধীরে ব্যথা কমে যাবে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার: অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য কাঁধ ও ঘাড়ের ব্যথাসহ শরীরের যেকোনও ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। গরম জলে ভিনেগার মিশিয়ে ব্যথার স্থানে ম্যাসাজ করুন অথবা এই ভিনেগারে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে ব্যথার জায়গায় রাখুন। আবার ভিনেগার ও মধু জল মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। দিনে দু’বার এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে উপকার পাবেন।

হলুদ : হলুদে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ঘাড়ের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও, হলুদ রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতেও সহায়তা করে। নারকেল তেলের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় মিশ্রণটি লাগান। এটি ব্যথা কমাতে সহায়তা করবে। আবার এক গ্লাস দুধে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে গরম করে নিন এবং অল্প পরিমাণে মধু যোগ করে এই মিশ্রণটি দিনে দু’বার পান করুন। এটাও ব্যথা কমাতে ভূমিকা রাখবে।

ঘাড়ের ব্যায়াম: ঘাড়ের এমন কিছু ব্যায়াম আছে যা ঘাড়ের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। ঘাড়ের ব্যায়াম করার আগে মাংসপেশিকে প্রসারিত করতে গরম সেঁক দিয়ে দিন। এরপর আপনার ঘাড়টি বৃত্তাকার গতিতে একবার ক্লক ওয়াইজ এবং আবার অ্যান্টি ক্লক ওয়াইজভাবে ঘোরান। এবার ঘাড়টি আস্তে আস্তে পিছনে এবং সামনে, আবার একবার ডান পাশ ও একবার বাম পাশে ঘোরান। এভাবে ১৫ মিনিট করে দিনে ৩-৪ বার করুন। এটি ব্যথা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy