ভাজা মাছ কখনোই বেশি খাওয়া ঠিক নয়, মারাত্মক রোগের ঝুঁকি রয়েছে এতে

কথায় বলে- ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। ভোজনবিলাসী মানুষেরা নানারকম মাছের মজার রান্না করে থাকে।আমরা বাঙালি জাতি মাছ অনেক পছন্দ করি। নিজের অজান্তেই আমরা ভাজা মাছ খেয়ে আমাদের শরীরকে বিপদের দিকে ঢেলে দিচ্ছি। তবে বাঙালি হিসাবে মাছ না খেলে নয়। তাই কী মাছ কতটা খাবেন তার উপরেই নির্ভর করছে আপনার শরীরের ভাল মন্দ।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, সপ্তাহে একাধিক বার বা ঘন ঘন ভাজা মাছ খেলে হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে ৪৫-৪৮ শতাংশ। মাঝেমধ্যে খেলে স্টকের আশঙ্কা বাড়ে ৪৪ শতাংশ। উচ্চতাপে তেল ফেটে রাসায়ানিক তৈরি হয়। ব্যবহার করা তেল দিয়ে ভাজলে আরও বিপদ। বনস্পতি দিয়ে ভাজলে তো কথাই নেই। এতে কোলেস্টরেল বাড়ে আরও বেশি পরিমানে।

তাহলে কি মাছ খাওয়া বন্ধঃ না মাছ খাওয়া বন্ধ নয় তবে ভাজা মাছ খাওয়া বন্ধ। তবে আমরা মাছকে গ্রিল, আগুনে সেকে খেতে পারি। সপ্তাহ পাঁচেক এভাবে খেলে বিপদের আশঙ্কা ৩০ শতাংশ কমে যাবে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

ভাজা মাছ খেতে হলে অল্প করে তেল দিয়ে খেতে পারেন। তবে সাবধান ডুব তেলে ভাজবেন না।তাহলে বিপদ নিকটে চলে আসবে। মাছের পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে হলে মাছ ভাজা বাদ দিতে হবে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ সঠিক ভাবে রান্না করে খেলে সুগার, কোলেস্ট্রেল, ওজন, রক্তচাপ, সবকিছু ঠিক থাকে। হার্টআট্যাক ও স্টকের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।

৪৯ হাজার মহিলার উপর গবেষণার উপর ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ এর ‘হাইপারটেনশন’ নামের জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যে সমস্ত মহিলারা সপ্তাহে কিংবা মাসে অন্তত একবার মাছ খান, তাদের তুলনায় যারা খান না তারা ৫০ শতাংশ হৃদ রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সুতরাং কোন ভাবেই খাদ্য তালিকা থেকে মাছ বাদ দেওয়া যাবে না।

কোন মাছ কতখানি কিভাবেঃ মাছ থেকে এ চাহিদা পূরণ করতে চাইলে দেখে নিন ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ এর গাইড লাইন কী বলছে৷ ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ’ এর বিজ্ঞানীদের মতে, সারা দিনে যত ক্যালোরি খাওয়া হয়, তার অন্তত দু’শতাংশ আসা উচিত ওমেগা থ্রি থেকে৷

মোটামুটি হিসাবে দিনে ৪ গ্রামের মতো৷ হৃদরোগ ঠেকাতে খান কালচে রঙের মাছ৷ যেমন, স্যামন, ম্যাকারেল, ব্লু ফিশ৷ রুই-কাতলা, মৃগেলেও উপকার আছে। তবে খুব পাকা বা দীর্ঘ দিনের বরফ দেওয়া চালানি মাছ হলে সে মাছ এড়িয়ে চলুন। হার্টের সুরক্ষার খাতিরে সপ্তাহে অন্তত দু’-তিন বার ৩.৫ আউন্সের মতো তৈলাক্ত মাছ খান৷

কোন ক্রমেই ভাজা মাছ খাবেন না। তবে অসুখ বিশুখ না থাকলে মাঝেমধ্যে ভাজা মাছ খেতে পারেন। কিভাবে মাছ রান্না করছেন সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্রয়েল অথবা মাছ গ্রিল করে খেতে পারেন। ইসকিমিয়া, হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ রোগ থেকে বাঁচতে ভাজা মাছ এড়িয়ে চলুন।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy