বাঙালির মাছ ছাড়া চলে না, আমাদের দৈনিক খাদ্যতালিকায় আমিষ থাকতেই হবে। তাছাড়া ডাল, ডিম, দুধও প্রোটিনের জোগান দেয়। মনে রাখবেন, প্রোটিন আমাদের শরীরের পুষ্টি ও শক্তি জোগায়, তা একান্ত আবশ্যক ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্ট। প্রোটিনই আপনার মাসল তৈরি ও মেরামত করে। শরীর প্রোটিন জমিয়ে রাখতে পারে না, তাই সব শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম যথাযথভাবে করার জন্য প্রতিদিনের খাবারের মাধ্যমে তা শরীরে জোগান দিতে হবে। প্রোটিন তৈরি হয় অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে, মোট 22 ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে। এর প্রতিটিই শরীরের প্রয়োজন। তার মধ্যে 9টি অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে কোনওভাবেই তৈরি হতে পারে না, সেগুলিকে বলে এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড। প্রোটিনের যে সব উৎসে এই নয় ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডেরই অস্তিত্ব আছে, সেগুলি আদর্শ বলে বিবেচিত হয়। এর মধ্যে পড়ে মাছ, ডিম, দুধ, মাংস (লাল ও সাদা) পড়ে। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের ডাল, ছোলা, কিনওয়া, সোয়া, বিনস, নানা ধরনের বাদাম ইত্যাদি। তবে কিনওয়া আর বাজরা বাদে অধিকাংশ উদ্ভিজ্জ উৎসেই কোনও না কোনও এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিডের অনুপস্থিতি দেখা যায়।
কোন ধরনের প্রোটিন আপনার শরীরের জন্য আদর্শ, উদ্ভিজ্জ না প্রাণিজ?
দুই ধরনের প্রোটিনেরই কিছু গুণ আবার কিছু খামতি আছে। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে থাকে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, কিছু অ্যান্টিঅক্সিডান্টস এবং প্রচুর ফাইবার। শেষোক্তটির উপস্থিতির কারণে তা হজমের পক্ষে সহায়ক হয়। আবার উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে আয়রন ও ভিটামিন বি 12-এর ঘাটতি থাকে। প্রাণিজ প্রোটিনে কোলেস্টেরল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি হয়। যাঁরা অ্যাথলিট বা মাসল মাস বাড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা সাধারণত প্রাণিজ প্রোটিনের উপরেই বেশি ভরসা রাখেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন, তা হলে শরীরও পূর্ণ পুষ্টি পাবে। তার চেয়েও বড়ো কথা হচ্ছে, আপনার যা খেতে ভালো লাগে না, তা জোর করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন না কখনও। খেতে ভালো লাগছে না মানেই আপনার শরীর সেই বিশেষ বস্তুটি হজম করতে পারছে না, তাই অস্বস্তি হচ্ছে। ডাক্তার, ডায়েটিশিয়ান, জিমের বন্ধু – সকলের কথা শুনুন, কিন্তু নিজের শরীরে কোন ধরনের প্রোটিন সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করছে সেটা একমাত্র আপনিই বুঝতে পারবেন। তবে তার জন্য আপনাকে নানা ধরনের প্রোটিন অবশ্যই খেয়ে দেখতে হবে।